কাঁচা লঙ্কার উপকারিতা ও অপকারিতা(কাঁচা মরিচ)

 আমাদের মত বাঙ্গালীদের ঘরে ঘরে কাঁচালঙ্কা ছাড়া তরকারি খাওয়ার কথা তো আমরা ভাবতেই পারি না ।কাঁচা লঙ্কার উপকারিতা ও অপকারিতা ভারতের কথা বাদ দিয়ে না হয় আপাতত এখন আসি পান্তা ভাতে বাঙালি, মানে পান্তা ভাত  পেঁয়াজ কাঁচালঙ্কা ছাড়া তো খাওয়া অসাধ্যকর একটা ব্যাপার ।শুধুমাত্র আমাদের ভারতবর্ষ নয়, কাঁচা লঙ্কা খাওয়ার জল রয়েছে দেশ-বিদেশে এবং অন্যান্য আরো অচেনা খাদ্য খাবারের সঙ্গে আসুন জেনে নিয়ে এই কাঁচালঙ্কার  জীবন কাহিনী।

কাঁচা লঙ্কা বা মরিচ এর উৎপত্তি মেক্সিকোতে বলে মনে করা হয় তবে এর আসল উৎপত্তি হল দক্ষিণ আমেরিকা। এবং সেখান থেকে স্পেনের নাবিকরা এই লঙ্কাকে দেশে দেশে ছড়িয়ে দিয়েছে বিভিন্ন বাণিজ্যের মাধ্যমে। এর বৈজ্ঞানিক নাম  হল -ক্যাপসিকাম ফ্রুটসেন্স

কাঁচা লঙ্কা english বলা হয় গ্রিন চিলি, তামিল ভাষায় বলা হয় পাচ্ছি মিল গাই, হিন্দি ভাষায় বলা হয় হারামিরচা, পাঞ্জাবি ভাষায় বলা হয় মীর চান। এছাড়াও বিভিন্ন ভাষায় এই কাঁচা মরিচ বা কাঁচা লঙ্কার বিভিন্ন নাম রয়েছে যা আমাদের কাছে অজানা।

কাঁচা লঙ্কার উপকারিতা ও অপকারিতা(কাঁচা মরিচ)

কাঁচা লঙ্কার উপকারিতা ও অপকারিতা(কাঁচা মরিচ)


কাঁচা লঙ্কা বা মরিচ পুষ্টিগুণ 

কাঁচা লঙ্কায় কোন ভিটামিন থাকে -ভিটামিন সি ,ভিটামিন এ ,পটাশিয়াম, ক্যালোরি ,কার্বোহাইড্রেট ,ফাইবার, চর্বি ,চিনি, প্রোটিন, নিয়াসিন, থিয়ামিন,রাইবোফ্লোবিন, আয়রন ফ্লবিং ,ম্যাঙ্গানিজ,ফসফরাস,কপার, ক্যাপসাইসিন,ম্যাগনেসিয়াম ও পর্যাপ্ত পরিমাণে জলের খোঁজ পাওয়া যায় এই মসলাতে। 

ক্যাপসাইসিন নামক এই যৌগ থাকার ফলে লঙ্কা এতটা ঝাঁঝালো বা ঝাল হয়ে থাকে। এই লঙ্কা ,লাল ,হলুদ ,সবুজ ইত্যাদি বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। কাঁচা লঙ্কা তে উপরই উক্ত ভিটামিন বা যৌগগুলি থাকার কারণে আমাদের মানবদেহের বিভিন্ন উপকার হয়। যেমন চুলের বিভিন্ন সমস্যা, চোখের সমস্যা ,হাড়ের সমস্যা ,দাঁতের সমস্যা ইত্যাদি আরো অন্যান্য খুঁটিনাটি সমস্যার সমাধানে কাঁচালঙ্কা আমাদের উপকার করে তাই আসুন জেনে নিই ঠিক কোন কোন সমস্যার সমাধানে কাঁচা মরিচ সাহায্য করে।

কাঁচা লঙ্কা খাওয়ার উপকারিতা, কাঁচা মরিচের উপকারিতা

1. ক্যান্সার রোধ: 

কাঁচা লঙ্কা তে যেহেতু ক্যাপসাইসিন নামক যৌগ আছে তাই তাই এক গবেষণায় ডাক্তাররা এবং বিভিন্ন বৈজ্ঞানিকরা জানতে পেরেছেন যে এই ক্যাপসাইসিন যৌগটিতে ক্যান্সার বিরোধী কিছু গুণ রয়েছে যা ক্যান্সারের কোষ কে আর বৃদ্ধি পেতে দেয় না। সম্ভাব্য ক্যান্সারের বৃদ্ধি প্রতিরোধ করতে পারে কাঁচা লঙ্কা খাওয়ার কারণে।

2. দীর্ঘস্থায়ী রোগ নিরাময়:

নিয়মিত কাঁচা লঙ্কা খাওয়ার কারণে শরীরের দীর্ঘস্থায়ী রোগগুলি আস্তে আস্তে ক্ষয় হতে থাকে কারণ কাঁচা মরিচ যেহেতু ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, তাই কাঁচা লঙ্কা খাওয়ার ফলে দীর্ঘস্থায়ী রোগ ধীরে ধীরে কমে।

3. খিটখিটে স্বভাবটা চলে যায়

মানুষের দেহে এন্ডোরফিন নামক একটি হরমন আছে যা ভাল হরমোন নামে পরিচিত আর কাঁচা মরিচ খাওয়ার কারণে মানুষের দেহে এই এন্ডোরফিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে  যায় ফলে মানুষের মেজাজ খুব ভালো থাকে, খিটখিটে স্বভাবটা চলে যায়। 

4. ডায়াবেটিস সমস্যা: 

কাঁচা লঙ্কা নিয়মিত খেলে আমাদের দেহের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে সঙ্গে ইনসুলিন সংবেদনশীলতাও বাড়ে ফলে টাইপ টু ডায়াবেটিস এর মত সমস্যার সমাধান খুবই সহজেই ঘটে যায়। 

5. হাড়ের ব্যথা: 

কাঁচা মরিচ থেকে ক্যাপসাইসিন নামক যৌগটি উদ্ধার করে বিভিন্ন হাড়ের ব্যাপক ব্যথা কমানোর মলমে ব্যবহার করা হয় যা আমাদের ব্যথা জায়গায় দিলে ব্যথা তাড়াতাড়ি নিরাময় পাওয়া যায়। 

6. ত্বকের উপকারিতা: 

কাঁচা লঙ্কা তে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে তাই এটি মুখে বা ত্বকে না মেখেও আমাদের ত্বকের উপকার করে কিভাবে দেখুন আমরা যদি নিয়মিত কাঁচা মরিচ খাই তাহলে এই কাঁচা লঙ্কার মধ্যে থাকা ভিটামিন সি আমাদের ত্বকের কমায় এবং ত্বকের জেল্লাও বাড়ায়।

7. ওজন কমায়:

 নিয়মিত কাঁচা লঙ্কা খেলে আমাদের শরীরের মেটাবলিজম বাড়ায় এবং অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা কমায়। 

8. ঘুমও ভালো হয়

কাঁচা মরিচ মধ্যে থাকে শক্তিশালী ক্যালসিয়াম যা আমাদের ব্রেনকে শান্তি প্রদান করে এবং এর ফলে ইন সুমিনিয়া ও অনিদ্রা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ঘুমও ভালো হয়। 

9. রক্তের শুদ্ধতা:

 কাঁচামরিচে থাকে সাপ নিন অ্যালকোয়েট এবং ট্রাইটনএড চা, রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে তবে সিজন অনুযায়ী বা মৌসুম অনুযায়ী কাঁচামরিচ যখন শেষ হয়ে যায় তখন এই মরিচ শুকনো করে যদি সংরক্ষণ করে রাখা হয় তাহলে এই শুকনো মরিচেও ওই একই উপকার পাওয়া যায়। 

10. হৃদ রোগ: 

কাঁচা লঙ্কা হাইপোকেমিক্যাল এ ভরা সেই কারণে হৃদয়ের যেকোনো রোগ সারাতে এই কাঁচা মরিচ এর আগে আর কোন কিছু নেই যদি নিয়মিত কাঁচা লঙ্কা খাওয়া হয় তাহলে হৃদপিন্ডের যে কোন ছোটখাট সমস্যা সমাধান হবে এবং হৃদরোগ নতুন করে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

11. দৃষ্টিশক্তি: 

কাঁচা মরিচ প্রচুর পরিমাণে ক্যারোটিন পাওয়া যায় যা আমাদের চোখের দৃষ্টিশক্তি পরিষ্কার এবং স্বচ্ছ করতে সাহায্য করে।

কাঁচা লঙ্কা খাওয়ার অপকারিতা/কাঁচা মরিচের ক্ষতিকর দিক

এতক্ষন কাঁচা মরিচ বা কাঁচা লঙ্কার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করলাম আপনারা দয়া করে উপকার ভেবে যেন বেশি বেশি করে খাবেন না নিয়মিত যতটা খাওয়া যায় ততটা খাওয়ার চেষ্টা করবেন তবে কাঁচা মরিচের ক্ষতিকর দিক, কাঁচা লঙ্কা বেশি খেলে কি হয়- এতে শরীরের তাপমাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে যেতে পারে এবং আমাদের দেহের বেশি টান হয়ে যেতে পারে অতিরিক্ত কাঁচালঙ্কা খাওয়ার কারণে তাই একটু সচেতন অবস্থায় থাকুন এবং সুস্থ থাকুন ধন্যবাদ

আমাদের গুগল নিউজ পোস্ট গুলি ফলো করুন ☛📰Google News

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url

Adsence

Adsence