নিম পাতার ব্যবহার বৈশিষ্ট্য গুরুত্ব এবং উপকারিতা
আজকের আলোচনার বিষয় হলো আপনি যা জানতে চাইছেন সেই বিষয় নিয়ে পরামর্শ দেবো -নিম পাতার বৈশিষ্ট্য, নিম পাতার উপকারিতা, নিম পাতার ব্যবহার, নিম পাতার গুরুত্ব, নিম পাতার বৈজ্ঞানিক নাম কি, নিম পাতার ব্যবহৃত অংশ, চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার, চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার, ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার, নিম পাতার ঔষধি গুন, চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার, চুলের জন্য নিম পাতার উপকারিতা, এই সমস্ত বিষয় এই আর্টিকেলটিতে অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শে লেখা হয়েছে।
নিম পাতার
বৈজ্ঞানিক নাম কি
প্রকৃতির সমস্ত উদ্ভিদ মানবজীবনের নানা উপকারে আসে ,তবে বেশিরভাগ উদ্ভিদ ঔষধ হিসাবে আমাদের বেশি সাহায্য করে। অন্যান্য ঔষধি গাছের তুলনায় নিম গাছের ঔষধি গুন্ অনেক বেশি নিমের বৈজ্ঞানিক নাম হলো -Azadirachta indica
নিম পাতার ব্যবহার বৈশিষ্ট্য গুরুত্ব এবং উপকারিতা
নিম পাতা বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ ও চিরহরিৎ নামে খ্যাত। প্রাকৃতিক ভাবে মানুষের জীবনের নানান সমস্যার মুশকিল আসান হিসাবে নিম বিশেষ খ্যাতি লাভ করেছে সেই আদি কাল থেকে ,তাই বিশ্বসংস্থা নিমের নাম দিয়েছে "একুশ শতকের বৃক্ষ" বলে।
এছাড়া বেদ
সহ বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে বলা হয়েছে নিম
সর্বরোগে নিবারণ ঔষধ ,কুরআন শরীফে বলা
হয়েছে প্রতিদিন নিমের ডাল দিয়ে দাঁত মেসওয়াক
করলে, এতে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়ে মাড়ি ভালো
রাখে। এবং আয়ুর্বেদের বিভিন্ন শাস্ত্রে বলা
হয়েছে একটি নিম পাতার কাছে একশো জীবাণু চূর্ণ
হয়ে যাবে ,অতএব নিম মানুষের জীবনে কত প্রকার বিশেষ রোগ সারিয়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য তা বুঝতে আর বাকি থাকেনা।
নিম
পাতার বৈশিষ্ট্য
এই নিম গাছ এশিয়ার মধ্যে ভারত ও বাংলা দেশের প্রায় সব জায়গায় দেখা যায় ,এছাড়া বহু বছর ধরে মানুষ তো প্রকৃতি থেকে সরাসরি নিম ব্যবহার করে উপকৃত হয়ে এসেছে তবে ইদানিং কিছু শিল্পে সরাসরি নিমের প্রয়োগ করে সাবান ,কলগেট ,ফেসওয়াশ ,ক্রিম ,ও ওষুধেও প্রকাশিত হচ্ছে তবে এতে উপকার ও পাওয়া যাচ্ছে। উপকারী নিম গাছের শিকড় থেকে পাতা,ফুল , ফল,ডাল , বাকল ইত্যাদি কিছু ফেলে দেয়ার মতো নয় ,সবকিছুই কোনো না কোনো কাজে লাগে।
এটি ৪০-৫৫ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে ,এর কাণ্ডের ব্যাস প্রায় ২৫-৩৫
ইঞ্চি পর্যন্ত হয়। ডালের চারিদিকে ১০-১২ ইঞ্চি বিশিষ্ট পাতা জন্মায় এবং এই পাতা গুলি
যৌগিক পত্র হয়। পাতা গুলি ২.৫-৪.৩ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এই নিম গাছের প্রথম
উৎপত্তি ঘটে মায়ানমারে এবং এর গুনাগুনের জন্য একে আমরা গ্রামের ডাক্তার ও বলে থাকি।
নিম পাতার গুরুত্ব এবং নিম পাতার উপকারিতা
মানব দেহের নানান জটিলতার সমাধান হিসাবে নিমকে ব্যবহার করা
হয় এবং সাথে সাথে এর উপকার পাওয়া যায় ,এছাড়া নিম
বিশেষ ভাবে বিভিন্ন জীবাণু নাশক কার্যকরী।
নিমকে প্রাচীন কালে মানুষ কীটনাশক হিসাবেও ব্যাবহার করতো ,মহিলাদের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিতে
ও নিম নানান ঘরোয়া টোটকায় ব্যাবহৃত হয়ে থাকে।
এছাড়া চুলের নানান উপকার পেতে নিম ফুল থেকে
তৈরী নিম তেল বিশেষ উপকারী। আসুন দেখে নিম গাছের কোন কোন অংশ আমাদের কি কি উপকারে আসে
যে যে সমস্যার
সমাধানে উপকৃত
-ওজন কমাতে
,ম্যালেরিয়া, ব্রণ দূর করতে,দাঁত ভালো রাখতে
,চোখ ভালো করতে ,খুশকি দূর করতে ,চুলকানি ,খোশ পাঁচড়া ,কৃমি দূর করতে ,ত্বকের সমস্যা
,উকুন দূর করতে ,চুল বড়ো করতে ,রক্ত পরিষ্কার করতে ,জন্ডিস ,ভাইরাস ,এলার্জি ,ক্ষত
নিরাময়ে ,ছত্রাকের ইনফেকশন ও একজিমা দূর করতে।
এবার আসুন জেনে নিই কি ভাবে নিম ব্যবহার করলে আমাদের শরীরে নানান রোগসমস্যার সমাধান হবে।
- ওজন
কমাতে নিমের ব্যবহার
ওজন বৃদ্ধি এমন একটি সমস্যা আমাদের নিজেদের অস্বস্তির সাথে সাথে অন্যদের সামনে ঠাট্টার খোরাক হয়ে উঠি ,তাই আমরা প্রত্যেকে চাই স্টার দের মতো স্লিম হয়ে উঠতে।
*নিমের স্বাদ তিতো হলেও এর নানান উপকারে আমরা মুগ্ধ ,এতে রয়েছে আন্টি ব্যাক্টেরিয়াল ও আন্টি ফ্লেমেটরি গুন্ যা আমাদের দেহের অন্যান্য উপকারের পাশাপাশি শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করে ,তবে ওজন কমানোর জন্য শুধু নিম খেলে ওজন কমবেনা ওজন কামতে গেলে নির্দিষ্ট কয়েকটি নিয়ম মেনে নিম ভক্ষণ করুন আপনি আগের মতো স্লিম হয়ে যাবেন সহজেই।
* দুই- চার জলের সাথে আগে থেকে ধুয়ে রাখা ৩০-৩৫ টি নীম পাতা ,তিন -চার চামচ আদার রস ,ও সাড়ে চার চামচ গোল মরিচ চূর্ণ দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে জল অর্ধেক হয়ে গেলে একটা ছাকনি দিয়ে ছেঁকে দুই চা চামচ মধু ও এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে এই পানীয় মিশ্রণ টি প্রতিদিন প্রতিদিন সকালে ও বিকালে খালি পেটে পান করুন। আর হ্যা এটি পান করার এক ঘন্টা পর্যন্ত খালি পেটে থাকুন।
এই মিশ্রণটিতে প্রচুর পরিমানে ফাইবার থাকে ফলে হজম জনিত নানান সমস্যা দূর হয়ে থাকে ,এছাড়া এটি পান করলে মেটাপলিজম বৃদ্ধি পায় ও কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে ধীরে ধীরে দৈহিক অতিরিক্ত চর্বি গলে যায়।
এবং শরীরকে ডিটক্সিফাই করে শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত বিষাক্ত ও রাসায়নিক পদার্থ বের করে দেয়।
*নিম পাতার উপকারিতা বিভিন্ন প্রকার যোগাবেয়ামের সাথে সাথে প্রতিদিন সকালে কাঁচা নিমের রস বা পাতা খাওয়া যেতে পারে এতেও সমাধান ঘটে।
*নিমফুলের জুস্ বানিয়ে খেতে পারেন প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে এতে দেহের মেটাবলিজম বৃদ্ধি হয়ে অতিরিক্ত চর্বি ভেঙে যেতে শুরু করে।
*যেহেতু
সারাবছর নীম ফুল পাওয়াযায়না তাই নীম ফুল ওজন বৃদ্ধি এমন একটি সমস্যা আমাদের
নিজেদের অস্বস্তির সাথে সাথে অন্যদের সামনে ঠাট্টার খোরাক হয়ে উঠি ,তাই আমরা প্রত্যেকে
চাই স্টার দের মতো স্লিম হয়ে উঠতে।তাই নীম ফুল গ্রীষ্ম কালে সংগ্রহকরে
শুকিয়ে গুঁড়া করে রাখুন এতে অনেক দিন আপনার প্রয়োজন মিটবে। প্রতিদিন একমুঠো করে এই
নীম ফুলের গুঁড়োর সাথে একচামচ মধু ও হাফ চামচ লেবুর রস ও হাফ গ্লাস গরম জলের সাথে মিশিয়ে
সকালে খালি পেটে খান দেখবেন মাত্র ১৫ দিনে আপনার ওজন এ কেমন পরিবর্তন এসেছে ,তবে এর
সাথে নিয়মিত ব্যায়াম করা আবশ্যক।
- ম্যালেরিয়ার
প্রভাব কমাতে
নিম পাতার
ব্যবহার, গুরুত্ব এবং উপকারিতা
ম্যালেরিয়া
রোগটি ছড়ায় স্ত্রী এনোফিলিস মশার আক্রমণে ,আর এই মশার উপদ্রব কমাতে আসুন কয়েকটি পদক্ষেপ
দেখেনেওয়া যাক।
*নিমপাতা
সিদ্ধ করে সেই জল ঠান্ডা করে বোতলে রেখে প্রতিদিন ঘরের কোনায় কোনায় স্প্রে করুন বাড়িতে
মশার উপদ্রপ কমবে।
*নীমে যেহেতু গ্যাডোনিন নামক উপাদান সমৃদ্ধ তাই এটি ম্যালেরিয়ার
ঔষধ হিসাবে কাজ করে ,এছাড়া ম্যালেরিয়ার চিকিৎসার ক্ষেত্রে যে ঔষধ ব্যাবহৃত হয় তাতে
নীমের উপাদান থাকে। ম্যালেরিয়ার প্রভাবে যেহেতু শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়
,সেক্ষেত্রে নীম আমাদের দেহ থেকে ম্যালেরিয়া নামক জীবাণুটি দূর করতে সক্ষম।
- ব্রণের জন্য
নিম পাতার ব্যবহার
আমাদের প্রত্যেকের মুখের নানা রকম সমস্যার মধ্যে ব্রণ অন্যতম ,এটি এমন এক প্রকার সমস্যা যা মুখের সৌন্দর্য বিশ্রীভাবে নষ্ট করে দেয়। তবে এর সমাধান রয়েছে নানান উপায়ে ,কিন্তু সবথেকে এই সমস্যার সমাধানে যেটি বেশি কার্যকরী সেটি হলো নীমের ঘরোয়া টোটকা।
নীম যেহেতু
উপকারী উদ্ভিদ তাই এটিকে ভেষজ উদ্ভিদ ও বলা হয় ,নীম অন্নান্ন উপকারের পাশাপাশি ত্বকের
উপকারেও বিশেষ সাহায্য করে। মহিলা থেকে পুরুষ
সবারই ব্রোনোর মতো সাধারণ সমস্যাটি হয়ে থাকে
তবে এটি দূর করতে নীমের ঘরোয়া টোটকা গুলি দেখা যাক।
নেমে আন্টি
ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকায় ব্রণ ,ফুসকুড়ি ,মেছতা ,দাগ ইত্যাদি দূর করতে বিশেষ ভাবে
সক্ষম।
*নীম পাতা
শুকিয়ে ভালো মিহি করে গুঁড়া করে এক চামচ নিয়ে এর সাথে এক চামচ চা ,এক চামচ টক দই ও এক চামচ বেসন মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরী করুন এবং রাতে ঘুমানোর একঘন্টা আগে এই মিশ্রণটি মুখে
ভালো করে লাগিয়ে একঘন্টা পর ফেসওয়াশ দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে একসপ্তাহ এই মিশ্রণ নিয়মিত
ব্যবহার করলে মুখের পুরোনো ব্রণের দাগ মুছে যাবে আস্তে আস্তে।
*শুকনো নিম
পাতার গুঁড়া এক চামচ ,এক চামচ গোলাপ জল, এক
চামচ গোলাপজল ও এক চামচ কমলা লেবুর রস মিশিয়ে মিশ্রণ টি ব্রণ জায়গায় লাগান ,ত্রিশ
মিনিট পর ভালো করে ধুয়ে ফেলুন এতে ব্রণ সেরে যাবে খুব তাড়াতাড়ি।
*নিমপাতা
সিদ্ধ করে প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় সেই জল
দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন
ব্রণ সহজেই
দূর হবে।
*দুই চা চামচ
নিমের পেস্ট ও এক চা চামচ পাকা পেঁপে চটকে মুখের ব্রণ জায়গায় লাগান ,২০ মিনিট পর ঠান্ডা
জলে ধুয়ে কমপক্ষে সপ্তাহে তিন বার করুন ব্রণ দ্রুত দূর হবে।
*নীম ও কাঁচা
হলুদের পেস্ট তৈরী করে নিয়মিত মুখে লাগান কয়েক দিনের মধ্যে এই সমস্যার সমাধানা ঘটবে।
কারণ নীম ও কাঁচা হলুদে রয়েছে আন্টি ব্যাকটেরিয়াল ও আন্টি ফাংগাল উপাদান যা ত্বকের
ব্রণ সহ নানা সমস্যা দূর করে।
*নীম ও তুলসী পাতা একসাথে পেস্ট করে সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার
করুন এবং ১০-২০ পর মুখ ধুয়ে ফেলুন। নীম ও তুলসী তে রয়েছে এন্টিসেপটিক যা ব্রণ দূর করে।
- দাঁত ভালো
রাখতে নিম পাতার ব্যবহার এবং নিম পাতার উপকারিতা
আমাদের দাঁতের বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন প্রকার সমস্যা দেখা দেয় ,তবে এই ধরণের সমস্যা গুলি দূর করার জন্য আমরা যদি হাতের কাছে থাকা নীম এর টোটকা ব্যবহার করি তবে সহজেই এর সমাধান পাওয়া যায় ,এছাড়া ইসলামিক ধর্মগ্রন্থ কুরআন শরীফে বলা হয়েছে যে ব্যাক্তি প্রতিদিন মেসওয়াক সে বাসটি নবীজির অত্যন্ত্য কাছের মানুষ এছাড়া মেসওয়াক করলে দীর্ঘদিন দাঁত ও মাড়ি ভালো থাকে। মেসওয়াক মানে হলো -নীমের ডাল দিয়ে দাঁত ঘষা বা মজা এর ফলে নীমের দল থেকে একপ্রকার তেল বের হয় যাতে রয়েছে শক্তিশালী এন্টিমাইক্রোবিয়াল ও আন্টি ব্যাকটেরিয়াল যা মুখের মধ্যে প্লাগ তৈরী হতে বাধা দেয় ও দুর্গন্ধ ছড়ায় না।
তাছাড়া দাঁত মজবুত করে ও বিভিন্ন প্রকার রোগ কমিয়ে দেয় ,কারণ প্রাচীন কাল থেকে নীমের ডাল দিয়ে দাঁত মাজার প্রচলন রয়েছে এতে জীবাণু দূর হয়ে দাতের মাড়ি শক্ত করে তোলে।
এছাড়াও এতে দাঁতে ক্যাভিটি না হয়ে লালা ক্ষারীয় মাত্রা বাড়িয়ে দেয় ,এবং হলুদবর্ণ দাঁত কে সাদা ঝকঝকে করে তোলে। তাই ক্রীড়া সেলের পুষ্টিবিদ নিধি গুপ্ত ওরাল হেলথ সুস্থ করতে নীম দাঁতন কে সেরা বলে ঘোষণা করেছে।
আবার নিম পাতা পুড়িয়ে সেই ছাই ,নিমের গুঁড়া ও নীমের ছাল দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁতের ব্যাথা ,মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া র মতো সমস্যা দেখা দেয় না।
- চক্ষু
ভালো রাখতে নিম পাতার ব্যবহার এবং নিম পাতার উপকারিতা
আমাদের বেশিরভাগ মানুষের এখন প্রতিনিয়ত ফোন ,কম্পিউটার এর মতো যন্ত্রের দিকে নিয়ম করে তাকিয়ে থাকার ফলে চোখের নানা সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া চোখের জল কাটা ,চোখ ওঠা ,চোখলাল,জয় বাংলা ,চোখ চুলকানির মতো সমস্যা তো লেগেই রয়েছে। এই সব সমস্যা গুলি দূর করতে কিন্তু নীম আমাদের ঘরোয়া টোটকা হিসাবে ভীষণ কার্যকরী।
যেমন -নিমপাতার জল ফুটিয়ে সেই জল ঠান্ডা করে দিনে দুই থেকে তিন বার চোখ ধুয়ে নিন।
- খুশকি
দূর করতে নিম পাতার ব্যবহার এবং নিম পাতার উপকারিতা
শীতকালে খুশকির প্রকোপ বাড়লেও বছরের প্রায় বিভিন্ন সময়ে ৬৫ %মানুষের মাথার চুলে খুশকির সমস্যা অবস্থান করছে সেই সমস্যার সমাধানে নীম পাতা অনেক উপকারী। আসুন দেখে নিই চুলের জন্য নিম পাতার উপকারিতা -
নিমের পাতা ও চাল জলে ফুটিয়ে সেই জল ঠান্ডা করে মাথা ভালো করে স্কাল্প করে ধুয়ে নিলে সমাধান ঘটবে।
৮৫-৬ টেবিল চা চামচ মেথি ভালো করে ধুয়ে আধ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন ,এবার এতে নীম পাতা ২০ তার মতো দিয়া পেস্ট করে নিন এবং এর সাথে এক চামচ করে ত্বক দই ও লেবুর রস মিশিয়ে ভালো করে একটি মিশ্রণ তৈরি করে এটি স্নানের আগে ২ ঘন্টার মতো মাথায় লাগিয়ে তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়ম করে সপ্তাহে তিন বার এটি করুন ১৬ দিনে এই সমস্যার সমাধান ঘটবে।
*এছাড়াও নিমের তেল নিয়মিত মাথায় এবং সকালে খালি পেতে নিম পাতা চিবিয়ে খান ও নিম পাতা ফোটানো জল পান করুন উপকার পাবেন।
*২০-২৫ টি নিম পাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করে এতে এক চামচ মধু মিশিয়ে মাথার স্কাল্পে ভালো করে ম্যাসাজ করুন আধা ঘন্টা পর ধুয়ে নিন।
- চর্মরোগে
নিম পাতার ব্যবহার এবং চুলকানিতে
নিম পাতার ব্যবহার
চুলকানি এমন একটি সমস্যা যা আমাদের সভ্য সমাজের সামনের ভীষণ লজ্জায় ফেলে দেয় এবং চুলকানোর সময় খুব মজা পাওয়া গেলেও পরে এর মজা বোঝা যায় হাড়ে হাড়ে ,আসলে পরে ওই স্থানে আগুনের মতো জ্বলতে থাকে। প্রথমে শরীরে ছোট ফুসকুড়ির আবির্ভাব ঘটে এবং পরে এটি অস্বস্তি কর চুলকানি ও অসহ্য কর হয়েওঠে ,এর জন্য আমরা ঘরোয়া টোটকা হিসাবে নীমের ব্যবহার করতে পারি।
কারণ
নিমে আন্টি ফাঙ্গাল উপাদান জীবাণু নাশক হিসাবে ভালো কাজ করে ।
*নীম পাতা ফোটানো জল দিয়ে চুলকানি যুক্ত স্থান প্রতিদিন ভালোকরে ধুইলে চুলকানির সমস্যা দূর হয়।
*নীম পাতা ও হলুদ পেস্ট করে চুলকানি স্থানে ভালো করে প্রলেপ লাগিয়ে ২ ঘন্টা পর ধুয়ে ফেলুন।
*নীম পাতার গুঁড়োর সাথে সর্ষেতেল মিশিয়ে ভালো করে ভালো করে চুলকানির স্থানে প্রলেপ দিয়ে ১ ঘন্টা রেখে ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন।
*নীম ছাল সিদ্ধ করে সেই জল প্রতিদিন খালি পেটে পান করুন সমস্যার সমাধান ঘটবে।
*এছাড়াও নীম ফুল ভেজে ভাতের সাথে খাওয়া যেতে পারে।
(খোসা পাচারের ক্ষেত্রেও এই টিপস গুলি প্রযোজ্য )
- কৃমি
দূর করতে নিম পাতার ব্যবহার এবং নিম পাতার উপকারিতা
কৃমি একটি পরজীবী জীব যা আমাদের অন্তরে বাঁসা বাঁধে ও ধীরে ধীরে বংশ বিস্ত্রের কাজেও লেগে পরে এছাড়া আমাদের খাওয়া খাদ্য থেকে সমস্ত পুষ্টি কৃমির সংগ্রহ করে নেয় ফলে কৃমি আক্রান্ত ব্যাক্তির দেহ ফ্যাকাশে, পেট বড়ো ,মূল দ্বারে চুলকানি, পেটে বেথার মতো সমস্যা দেখা দেয়। ছোট শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত মানুষদের মধ্যে এই সমস্যা বিদ্যমান।
এর সমাধানের জন্য নীম বিশেষ উপকারী কারণ নীমে রয়েছে এন্টিফ্লেমেটরি উপাদান।
এক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে নীম পাতার পেস্ট কাবা যেতে পারে।
এছাড়া
এক গ্লাস করে নীমের
রস প্রতিদিন সকালে খালি পেতে নিয়মিত খাওয়া যেতে পারে ,যারা এটি খেতে পারবেননা অতিরিক্ত তিতর কারণে
তাদের ক্ষেত্রে প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় তেতো জাতীয় মেনু
রাখুন।
- ত্বকের
সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে নিম গাছের পাতা
বর্তমানে দূষিত আবহাওয়া, নিত্যকাজের চাপ ,ও ব্যস্ততার কারণে আমরা নিজেদের দিকে ভালোভাবে নজর দিতে পারিনা তাই ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় জড়িয়ে পড়েছি আমরা।
আর নিজেদের এই সমস্যা দূর করে যখনি আকর্ষণীয় হওয়ার চেষ্টা করছি তখনি পড়ছি কেমিক্যাল এর কবলে এতে অন্নান্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি ,সেই জন্য আমরা যদি এর সমাধানের জন্য সরাসরি নিমের ওপর নির্ভর করি তাহলে নিঃস্বন্দেহে উপকার পাবো ,কারণ নিমে রয়েছে আন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান যা আমাদের ত্বকের ১০১ টি সমস্যার সমাধান করে।
কিন্তু কিভাবে নীম ব্যবহার করবো তা আমরা অনেকেই জানিনা তাই আসুন জেনে নিই নীম ব্যবহারের সঠিক নিয়ম-
*ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় হলুদ ও নীম এর পেস্ট আমাদের ত্বকে লাগাতে পারি ,এতে সমাধান পাওয়া যাবে।
*নীম পাতা শুকিয়ে মিহি করে গুঁড়া করে নিন এবার প্রতিদিন স্নানের আগে এই শুকনা নিমের গুঁড়া ও এক চামচ ত্বক দই ,এক চামচ মধু দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরী করে ত্বকের যে কোনো সমস্যা যুক্ত স্থানে ভালো করে প্রলেপ দিন এবং ২০ মিনিট পরে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিন।
*এছাড়া প্রতিদিন নিয়মিত নীম পাতা খান।
- উকুন
বিনাশে সহায়ক নিম গাছের পাতা
উকুন একটি পরজীবী প্রাণী যা আমাদের মাথায় বসবাস করে এবং মাথার তেল ও রক্ত খেয়ে বেঁচে থাকে এতে আমাদের চুলের ক্ষতির সাথে সাথে মাথার চামড়ার মারাত্বক ক্ষতি করে ,মাঝে মাঝে মাথার বিভিন্ন ক্ষতের সৃষ্টি করে এই উকুন। এই উকুন দূর করতে আমরা নানা রকম পন্থা ব্যবহার করি কিন্তু এতে চুলের বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয় যেমন-চুল ওঠা ,চুল ফাটা ,ইত্যাদির মতো সমস্যার সৃষ্টি হয়। একারণে আমি বলবো আমরা এমন সমস্যা সমাধানের জন্য নিমের উপর বিশেষ ভাবে নির্ভর করতে পারি ,কারণ নিমে রয়েছে এন্টিইফ্লেমেটরি উপাদান যা উকুনের মতো পরজীবীদের মেরে গোড়া থেকে নির্মূল করে।
*এক্ষেত্রে আমরা বাজারের বিভিন্ন নীম তেল ব্যবহার করতে পারি।
*সারারাত নীম ছাল থেঁতো করে জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে উঠে সেই জল ছেঁকে মাথার চুল ভালো করে ধুয়ে নিন ,সপ্তাহে এটি দু তিন বার করলে ২৬ দিনে উকুন দূর হবে।
আমাদের গুগল নিউজ পোস্ট গুলি ফলো করুন ☛📰Google News