ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা
আধুনিক বৈজ্ঞানিক গণনার রিপোর্ট অনুযায়ী,সারা বিশ্বজুড়ে প্রতিটি পরিবারে মোবাইল ফোনের ব্যবহার কারী ব্যাক্তি রয়েছে বলে সম্ভবনা রয়েছে। মোবাইল ফোনের অনেক কিছু ভালো দিক থাকলে ও অতিরিক্ত অহেতুক মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে এর ক্ষতির আশংকা অনেক গুন বেশি।
আমি আমার এই ওয়েবসাইট এ অন্য পোস্টে জানিয়েছি, ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের পাঁচটি উপকারিতা, মোবাইল ফোন আমাদের জীবনে কতটা ভালো দিক রয়েছে কিন্তু আজকের এই পোস্টিতে জানাবো ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা, এবং মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো।
আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে আমাদের কোনো না কোনো প্রয়োজনে মোবাইল ফোন কাজে লাগে। কিন্তু এই মোবাইল ফোন আমাদের জীবনে কি কি ক্ষতি করছে আপনি জানলে অবাক হবেন। মোবাইল ফোন আমাদের প্রতিদিন জীবনে এমন ভাবে জড়িয়ে গিয়েছে এর ক্ষতিকর দিক গুলি জানতে পারলে ও মোবাইল ফোন ছাড়া আমরা চলতেই পারবো না। যেহেতু বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে মোবাইল ফোন ছাড়া আমরা চলতে পারবো না, তাই আজকের জানাবো ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা এবং মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায়।
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা, মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায়
মোবাইল ফোন ব্যাবহারকারী প্রতিটি ব্যাক্তি দিনের বেশিরভাগ সময় মোবাইল ফোনের পিছনে দিয়ে থাকে। যার ফলস্বরূপ মানব শরীরে ঠিক কি কি ক্ষতি(মানসিক এবং শারীরিক সাস্থ ) হচ্ছে বুঝতে পারছে না। আমেরিকা যুক্ত রাষ্ট্রের একটি ক্যান্সার সোসাইটি ওয়েবসাইট এর তথ্য অনুযায়ী মোবাইল ফোনের কারণে ব্রেইন টিউমার এবং মাথা, গলা, ঘাড়ের টিউমার হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। বিজ্ঞানমহল রিসার্স অনুযায়ী মোবাইল ফোন থেকে একটি তেজস্ক্রিয় বিকিরণ নিঃসৃত হয় যা মানব শরীরে ক্ষতির আশংকা রয়েছে। বিভিন্ন নিউজ ওয়েবসাইট এর তথ্য অনুযায়ী মোবাইল ফোন এর ক্ষতিকারক দিক এবং এর থেকে বাঁচার উপায় নিচে আলোচনা করলাম।
১. চোখের সমস্যা
ইংল্যান্ডের চক্ষুরোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক- এন্ডি হেপওয়ার্থ, জানিয়েছেন মোবাইল ফোন জাতীয় বিভিন্ন ইলেকট্রনিক স্ক্রিন ডিভাইস ব্যবহারের সময় চোখের পলক কম পড়ে, এবং এই সমস্ত ডিভাইস থেকে একধরণের তেজক্রিয় যে ক্ষতিকর রশ্মি নির্গত হয় যার ফল স্বরূপ মাথা, ঘাড়, মস্তিস্ক যন্ত্রনা থেকে অনেক রকম সমস্যা এবং মাইগ্রেন এর মতো রোগ হতে পারে।
দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখতে অকাজে মোবাইল ফোন ব্যবহার করবেন না। দিনের বেশিরভাগ সময় স্ক্রিনের আলো দিকে না তাকিয়ে পরিবেশের আলো দিকে বেশি তাকান। তরুণ তরুণীদের সহ বাচ্চাদের হাতে স্মার্টফোনে ব্যবহার বন্ধ করুন।
আমাদের গুগল নিউজ পোস্ট গুলি ফলো করুন ☛📰Google News
২. মস্তিষ্কের ক্ষতি করে
সুইস গবেষকরা একটি গবেষণা করেন ১২ বছর থেকে ১৭ বছর পর্যন্ত বয়সীর কিশোর/কিশোরী এবং তরুণদের উপর কয়েক বছর ধরে। এই গবেষণায় দেখা যায় মোবাইল ফোন থেকে যে ক্ষতিকারক রেডিয়েশন আছে তার থেকে তাদের মস্তিষ্কের বিকাশের নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
নিয়মিত মোবাইল ফোনের ব্যাবহারে ফলে এর প্রতি একটি আসক্তি হয়ে পড়ছে দিন দিন শিশু থেকে বড়োরা। বিভিন্ন নিউস ওয়েবসাইট এর তথ্য অনুযায়ী এই সমস্ত মোবাইল ফোন ব্যাবহারকারীদের ব্রেন টিউমার থেকে শুরু করে, মস্তিষ্কের ক্যান্সার, নার্ভের ক্ষতি হয়ে পড়ে।
এর থেকে বাঁচার জন্য দিনের বেশিরভাগ সময় মোবাইল ফোন থেকে দূরে থাকতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের সামনে কোনোভাবেই এর ব্যবহার করা যাবে না। এমনকি অপ্রয়োজনে ফোনের থেকে আলাদা থাকতে হবে।
৩. কানে কম শোনা
মানবজীবনে মোবাইল ফোন ব্যবহারের অপকারিতা, লিখে শেষ করা যাবে না তার মধ্যে একটি হলো শ্রবণ শক্তি হ্রাস অথবা কানের সমস্যা। বিশেষ করে প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যাক্তিদের একটি অভ্যাস থাকে স্মার্টফোনে এর সাথে হেডফোন ব্যবহার করে। WHO একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে বিশেষ করে ব্লুটুথ হেডফোন এর রেডিয়ো ফ্রেইকোএন্সি বেশি থাকায় শরীরের ক্ষতি হওয়ার আশংকা বেশি থাকে।
এবং আরো রিপোর্ট পাওয়া যায় ১০০ ডেসিবেল অথবা তার থেকে বেশি শব্দ প্রতিদিনে মাত্র ১৫ মিনিট শুনলে স্থায়ীভাবে কানের সমস্যা হবে। তার বাস্তব উদাহরণ স্মার্টফোন বা হেডফোন এর ভলিউম বাড়িয়ে গান শোনা। রাস্তায় চলতে গিয়ে স্মার্টফোনের ব্যবহারের ফলে একসিডেন্ট অহরোহ ঘটছে যার একমাত্র কারণ কানে কম শোনা।
৪. ঘুমের সমস্যা
ঘুম একটি শারীরিক প্রক্রিয়া যা প্রতিটি মানুষকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ সবল রাখে। বিশেষ করে ছাত্র ছাত্রীদের পর্যাপ্ত পরিমান ঘুমের বিশেষ প্রয়োজন আছে। কিন্তু যে ছাত্র বা ছাত্রীর হাতে স্মার্টফোন নামক বস্তু থাকবে তার চোখ থেকে ঘুম উড়ে যাবে।
মোবাইল ফোনের অপব্যাবহার বেশি হয়ে থাকে ইয়াং জেনারেশন এর দ্বারা।
তারা অনলাইন গেম খেলা থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়া অপব্যাবহার করা। তার থেকে ও ভয়ানক ব্যাপার হলো পর্ণগ্রাফি মুভি, সিনেমা, ব্লুফিল্ম এর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়া। অনেকে বিভিন্ন শেয়ারিং এপ্লিকেশন এর দ্বারা ফটো, ভিডিও, ম্যাসেজ আদান প্রদান করে থাকে প্রেম বিনিময় করে স্মার্টফোনের দ্বারা।
৫. যৌন ক্ষমতা হ্রাস অথবা ভবিষ্যতে বন্ধ্যত্ব ভুগতে পারেন
এক্সেটর বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োসায়েন্সের একজন অধ্যাপক ফিয়োনা ম্যাথিউস ওনার নেতৃত্বে একটি গবেষণার টিম করে ১০ টি গবেষণা রিভিউ করে এবং ১৪৯২ টি নমুনা অবসেরভেশন করে তিনি আলোচনা করেন। যে স্মার্টফোন ব্যবহারের ফলে বিশেষ করে পুরুষদের শুক্রাণুর গুণগত মান নেতিবাচক প্রভাব ফেলে যা ভবিষ্যতে বাচ্চা জন্ম দিতে অক্ষম হতে পারে, এবং ভবিষ্যতের
নারীসংগীর চাহিদা পূরণ করতে অক্ষম হতে পারে।
মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায়
১. অতিরিক্ত দরকার ছাড়া মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না। বিশেষ করে শিশুদের সামনে থেকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যতটা এড়িয়ে থাকা সম্ভব ভালো।
২. অনেক বাবা মা অথবা তার অভিভাবকরা তাদের শিশুদের হাতে স্মার্টফোনে তুলে দেয় এই রকম করা যাবে না। কারণ শিশুকাল থেকে স্ক্রিন এর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়বে।
৩. যখন ফোনে কথা বলবেন ফোনটি কানের কাছে ধরবেন না। তার পরিবর্তে তারযুক্ত হেডসেড ব্যবহার করতে পারেন।
৪. আপনার স্মার্টফোনটি আপনার শরীরের কোনো অংশে না রাখার চেষ্টা করবেন যেমন - প্যান্টের পকেট , জামার বুক পকেট বা অন্য কোথাও রাখবেন না। ব্যাগে রাখার চেষ্টা করবেন।
৫. আপনার শিশুকে বিনোদনের জন্য ফোনের পরিবর্তে গল্পের বই অথবা সামগ্রী খেলার জন্য খেলনা দিন।
ছাত্র জীবনে মোবাইল উপকারিতা থাকলে ও এর অপকারিতা
ভাগ বেশি পরিমানে লক্ষ করা যায়। মোবাইল ফোন ছাত্রজীবনে ক্ষতিকর। ঠিক তেমনি প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ক্ষতিকর। এবং গর্ভবতী
মহিলাদের ও স্মার্টফোন ব্যাবহারে বিশেষ ক্ষতি করে। আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনার কোনো উপকারে আসে তাহলে
আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন মোবাইল ফোন সংক্রান্ত আরো কিছু জানতে চাইলে আমরা অন্য কোনো
আর্টিকেল জানিয়ে দেব।