তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা এর ব্যবহার
আজকের আলোচনার বিষয় তুলসী পাতার উপকারিতা, এর সাথে জানবো তুলসী পাতার অপকারিত, অর্থাৎ তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক, আপনি তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা দুটোই এই আর্টিকেল পড়লে বুঝতে পারবেন। তাছাড়া রাম তুলসী পাতার উপকারিতা, মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা, রূপচর্চায় তুলসী পাতার উপকারিতা, তুলসী পাতার বৈশিষ্ট্য, তুলসী পাতার ব্যবহার বিস্তারিত তথ্য আপনাকে দেয়ার চেষ্টা করেছি, আপনার কাছে একটাই অনুরোধ ধৈর্য দিয়ে পড়ুন অনেক কিছু জানতে পারবেন।
তুলসী গাছের ছবি |
সেই বহু আগে থেকেই হিন্দু ধর্মালম্বীদের তুলসী কে পূজা করতে দেখা গেছে তবে ,তুলসী যে মানবদেহের বিভিন্ন উপকারে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তা আমরা কম বেশি প্রত্যেকেই জানি।তবে
কিন্তু আজ আমি আপনাদের তুলসীর কিছু আশ্চর্যজনক
উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করবো ,কথায় আছে কোনো কিছু শুরু করতে হলে সেই সম্পর্কে প্রথম
থেকে জানাথাকা ভালো। তাই আসুন আগে জেনে নিই তুলসীর জীবনের ইতিহাস।
আমাদের গুগল নিউজ পোস্ট গুলি ফলো করুন ☛📰Google News
তুলসী পাতার বৈশিষ্ট্য
তুলসী গাছের বিজ্ঞানসম্মত
নাম ocimum sanctum ,তুলসী কথার অর্থ হলো যার কোনো তুলনা নেই। নাম অনুযায়ী তুলসীর সত্যিই
কোনো তুলনা হয়না, লামিয়াসি পরিবারের অন্তর্গত একটি সুগন্ধি উদ্ভিদ হলো এই তুলসী। এটি
ঘন দল পালা বিশিষ্ট চিরহরিৎ গুল্মএর উচ্চতা
সাধারণত দুই থেকে তিন ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই গাছ পরিবেশের প্রচুর ওক্সিজেন সরবরাহ
করে থাকে ,তাই একে অক্সিজেনের ভান্ডার বলে।
বিশেষত ভারতে চারপ্রকার তুলসী দেখা যায় ,যেমন
– বাবুই তুলসী ,রাম তুলসী ,কৃষ্ণা তুলসী ,
শ্বেত তুলসী
তুলসী পাতার গুণাগুণ ও পুষ্টি উপাদান
তুলসী গাছের পাতায় বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান
-ভিটামিন এ ,ভিটামিন সি ,ভিটামিন কে, আয়রন ,ক্যালশিয়াম , ম্যাগনেশিয়াম ,পটাশিয়াম ,খনিজ
,ফাইবার, প্রোটিন,ইউজেনল , এন্টিবায়োটিক, আন্টি ইনফ্লেমেটরি,দোস্ত ,সাইট্রিক ,টারটারিক
,ম্যালিক অ্যাসিড ইত্যাদি।
তুলসী পাতার উপকারিতা
সর্দি কাশিতে তুলসী
ইদানিং আবহাওয়া যখন তখন পরিবর্তিত হওয়ার কারণে আমাদের প্রত্যেকের পরিবারে কম বেশি ছোট থেকে বড়ো সবারই ,সর্দি কাশির মতো অসুখ নিত্যদিন লেগেই রয়েছে। তবে এরকম সর্দি কাশি নিয়ে কার বা জীবন কাটাতে ভালো লাগে এছাড়া প্রিয়জন যদি এভাবে ছোটোখাটো সর্দি, কাশি অথবা জ্বর এ ভোগেন তাহলে নিশ্চই আপনার অথবা আমার ভালো লাগবেনা।
আরো পড়ুন : সর্দি কাশি কেন হয় এবং দূর করার ঘরোয়া উপায়
আর সেই ঝুঁকি কাটাতে আমরা তৎক্ষণাৎ দৌড়ে চলে যাচ্ছি কাছাকাছির
ফার্মেসিতে ,এতে অসুখ যদিও কমে যাচ্ছে তবে ভেবে দেখেছেন কি এতে আপনার অথবা আপনার প্রিয়জনের
কি রকম ক্ষতি হতে পারে। তাইতো এই সমস্যার জন্য ফার্মেসি নয় বরং গাছ গাছড়ার উপর নির্ভর
করুন ,তবে না জেনে নয় ,হাতের স্মার্ট ফোনে জেনে নিন বিভিন্ন গাছগাছড়ার সম্বন্ধে গুগল
ড্রাইভ এ।
যাইহোক, আসুন মূল কথায় আসি
-আসলে এন্টিবায়োটিক সমৃদ্ধ এই তুলসীই পারে আপনার অথবা আপনার প্রিয়জনের সর্দি,কাশি
,জ্বরের মতো সমস্যা দূর করতে। কখন কিভাবে খাবেন আসুন জেনে নিই।
তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম
- তুলসী পাতার ব্যবহার
১.এক্ষেত্রে সকালে খালি পেটে তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
২. কুড়ি থেকে পঁচিশ টির মতো তুলসী পাতা ২ কাপ জলে দিয়ে ভালো করে ফোটান এর
পর এতে আদা ও এলাচ এর গুঁড়ো দিন। প্রতিদিন
সকালে খালি পেটে খান উপকার পাবেন।
৩.তুলসী পাতা জলে ফুটিয়ে
এতে মধু লেবু দিয়ে প্রতিদিন খালি পেটে সকালে ও সন্ধ্যায় খান একসপ্তাহে উপকার পাবেন।
৪. মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা, কাঁচা তুলসীর রস ও মধু প্রতিদি সকালে খালি পেটে এক চামচ করে খেতে পারেন উপকার বেশ ভালোই পাবেন তিন দিনে।
আরো পড়ুন : জেনে নিন মধুর গোপন কিছু উপকারিতা
হজমের সমস্যায় তুলসী পাতার ব্যবহার
হজমের গোলযোগ অথবা পেটের মোচড়ানির সমস্যা এখন প্রিতিদিনের রুটিন হয়ে গেছে , কারণ বর্তমানে খাদ্যাভ্যাস উন্নতির কারণে আমাদের হজম তন্ত্রের বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিচ্ছে। সেই কারণে যখন তখন স্বস্তির আসায় ডাক্তারের কাছে যেতে হয় ,তবে সবসময় তগো আর মেডিক্যাল খোলা থাকেনা। তাছাড়া বিভিন্ন জনের বিভিন্ন সমস্যা ফার্মেসিতে তাই এই সমস্যার সমাধানের জন্য ঘরোয়া ভাবে তুলসীকে বেঁচে নিন আর হজম সমস্যার দূর করুন। তবে হ্যাঁ গুরুতর সমস্যায় ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
তুলসীতে রয়েছে এন্টিইনফ্লেমেটরী
,খনিজ,ও ফাইবারের মতো আরো অনেক উপাদান যা হজম ত্রুটি বা বদহজম ,এসিডিটি , বুকের জ্বালা
প্রভৃতি সমাধানে সহায়ক।
কিভাবে খাবেন - তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম
১. নারিকেলের জল বা ডাবের
জলের সাথে দুই তিনটি তুলসীর রস মিশিয়ে খান খালি পেটে।
২.খাওয়ার পর বদ হজম বা গ্যাস্ট্রিকের মতো সমস্যায় একগ্লাস জলের
সাথে ৫ চামচ লেবুর রস ও ৪ টি তুলসী পাতার রস মিশিয়ে খান কিছুক্ষনের মধ্যে উপশম হবে।
৩.বুক জ্বালা ,এসিডিটির মতো
সমস্যায় বাটার মিল্কের সাথে তুলসীর রস খাবার খাওয়ার পর খান ৫ মিনিটেই উপকার পাবেন।
আরো পড়ুন : খিদে না পাওয়ার কারণ ও খিদে পাওয়ার উপায়
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে তুলসী পাতার ব্যবহার
বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ৯৩ শতাংশ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত,ডায়াবেটিস রোগের ক্ষেত্রে এখনো পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো নিরাময় আবিষ্কার হয়নি। এই রোগে নিয়মিত ওষুধ খেতে হয় , ব্লাড সুগার লেবেল বেড়ে গেলে খাদ্যাভ্যাস /জীবন যাত্রা র পরিবর্তন ছাড়া কোনো উপায় হাতে থাকেনা। শুধু খাদ্যাভ্যাস নয় শরীর চর্চার ক্ষেত্রেও বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন এই অবস্থায়।
এছাড়াও নিয়মিত ওষুধের সাথে ইন্সুলিন নিতেও হয় অনেক রোগীকে ,আর বিশেষ ভাবে বর্তমানে এক গবেষণায় জানা গিয়েছে যে -বয়সের কোনো ভেদা ভেদ ছাড়াই দিন দিন ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বহু মানুষ।
এক্ষেত্রে শুধু মাত্র ওষুধ,খাদ্যাভ্যাস
,জীবনযাত্ৰা ও ইন্সুলিন এর পাশাপাশি ঘরোয়া
ওষধি ব্যবহার করা যেতে পারে যা সম্পূর্ণ কার্যকরী।
সেই ঘরোয়া ওষুধ হলো তুলসী।,হ্যাঁ এই তুলসীতে রয়েছে প্যানিক্রিয়াস বেটা যা সেলের কার্যক্ষরণ ক্ষমতা বাড়িয়ে ,ইন্সুলিন ক্ষরণকে প্রভাবিত করে। এছাড়াও তুলসী পাতা রক্তের সর্করার স্তর সঠিক রাখে ,খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এতে ইউজেনল থাকে যা রক্ত চাপ কমাতে সাহায্য করে।
বেশ কিছুদিন আগে নোটিং হ্যাম
বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯০ জন ডায়াবেটিস রোগীর উপর একটি একটি পরীক্ষা করা হয় যেখানে টাইপ ২
ডায়াবেটিস আক্রান্ত ৬০ জন কে গবেষকের নির্দেশ
মতো সাধারণত ডাক্তার দের দেওয়া ওষুধ খেতে বলা
হয়ে ছিল ,আর বাকি ৩০ জনকে প্রতিদিন ওষুধ না খেয়ে ২৫০ মিলিগ্রাম করে তুলসীর বড়ি খেতে
বলা হয়েছিল,
৯০ দিন ধরে নিয়মিত এই সমীক্ষা চলার পর দেখা যায়,
যে সব ব্যাক্তিরা তুলসী খেয়েছিলেন তাদের রক্তে
র শর্করা অর্থাৎ গ্লুকোসের পরিমান নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কোনো রকম ইন্সুলিন অথবা ওষুধ ছাড়া।ডায়াবেটিস
নিয়ন্ত্রণে কিভাবে খাবেন তুলসী
এক্ষেত্রে নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে তুলসী,সে যে কোনো সময় খেলে চলবে তবে নিয়মিত
খেতে হবে।
আরো পড়ুন : ডায়াবেটিস কি,এর লক্ষণ,চিকিৎসা ও রোগীর খাদ্য তালিকা
*সারারাত তুলসীর কয়েকটি পাতা
জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই জল খালিপেটে পান করুন এতে আপনার অনেক ইন্সুলিন ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণে
থাকবে।
*সকালে তুলসীর চা করেও খেতে
পারেন।
*কাঁচা তুলসীর পাতা চিবিয়ে
খাওয়া যায়।
*তুলসীর রস ও মধু একসাথে
সকালে খেতে পারেন।
*যেকোনো তরকারির সাথে তুলসীর
পাতা দিয়ে রান্না করতে পারেন। মূলকথা তুলসী খাদ্যাভ্যাসের সাথে যোগ করেনিতে হবে যে
কোনো উপায়ে।
চুলে তুলসী পাতার উপকারিতা
বর্তমানে পরিবেশের উন্নতির সাথে সাথে দূষণ ও সমান ভাবে বেড়ে চলেছে ,যার প্রভাব আমাদের প্রত্যেকের দৈনন্দিন জীবন এর উপর পড়ছে। তাছাড়া আমাদের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ গুলো অনেক সমস্যা র সম্মুখীন হতে হচ্ছে ,তার অন্যতম একটা সমস্যা হলো চুল সংক্রান্ত সমস্যা।
নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজের চাপ
,অতিরিক্ত চিন্তা ,দূষণ,আর নিজেকে সুন্দর করতে প্রতিযোগিতার এই বিশ্বমঞ্চে নিয়মিত পার্লারে গিয়ে চুল কার্ল
,স্ট্রেট ,হিট ও চুলের রং ইত্যাদিতে বেশি প্রভাব
আমাদের চুলের উপর পড়ে চুলের প্রচুর ক্ষতি করে ,যেমন -চুল পড়া ,খুশকি ,অতিরিক্ত উকুন
,মাথার চুলকানি ,অল্প বয়সে চুল পাকা ,চুলের গোড়া আলগা ইত্যাদি।
আমরা কম বেই জানি যে আমাদের সমস্যা দূর করতে একমাত্র প্রোটিন ,ভিটামিন কে ,ভিটামিন সি ,ভিটামিন এ ,ভিটামিন ই ,আয়রন অধিক পরিমানে প্রয়োজন। আর এই সব উপাদানের ঘাটতি পূরণের জন্য আমরা বিভিন্ন ডক্টরের পরামর্শ নিচ্ছি ,বিভিন্ন তেল ও শ্যাম্পুর ব্যাবহার করে নিজের চুল ব্রেনের সমস্যার সৃষ্টি করছি প্রতিনিয়ত।
তবে এর একটা প্রাকৃতিক ঘরোয়া সমাধান আমরা প্রয়োগ করে দেখতে পারি ,সমাধানটি
হলো তুলসী। কারণ তুলসীতে রয়েছে সবকটা উপাদান যা আমাদের চুলের সমস্যা সমাধান করবে ,যেমন
-ভিটামিন এ ,ভিটামিন সি ,ভিটামিন ই ,প্রোটিন ,আয়রন,মাইক্রোবিয়াল ইত্যাদি।
আরো পড়ুন : চুল লম্বা না হওয়ার কারণ ,ঘন করার উপায় ও তেলের নাম
কিভাবে ব্যবহার করতে হবে তুলসী
*নারকেল তেলের সাথে ৩ চামচ
তুলসীর রস মিশিয়ে চুলের গোড়ায় গোড়ায় মালিশ করে ৩০ মিনিট পর্যন্ত রেখে দিয়ে যে কোনো
শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুলের গোড়া মজবুত হবে , স্ক্যাল্পে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি
পাবে ও চুল পড়ার সমস্যা দূর হবে। এটি বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রমাণিত।
*সারারাত তুলসী পাতা এক কাপ
জলে ভিজিয়ে রাখুন সকালে উঠে সেই পাতা ও ১টি আমলকি ভালো করে বেটে ৪০ মিনিট ধরে স্ক্যাল্পে মালিশ করুন এবং ৪০ মিনিট পর সেই তুলসী
পাতা ভেজানো জল ও যে কোনো শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন।
*তুলসী পাতা ,নিম পাতা ও
জবা পাতা একসাথে বেটে মাথায় লাগিয়ে রাখুন আধা ঘন্টার মতো এবং এরপর শ্যাম্পু করুন ভালোকরে
,এতে চুলএর খুশকি দূর হবে ,চুল সিল্কি হবে ,মাথার চুলকানি দূর হবে ,এবং চুলের গোড়া
শক্ত হবে। *৫০০ গ্রাম জলের সাথে ৩০-৩৫ টি তুলসী পাতা মিশিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিন ,এরপর শ্যাম্পু করার পর এই
জল দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। তবে হ্যাঁ এই জল ঠান্ডা না করে চুলে প্রয়োগ করবেন না।
*আপনার চুলের দীর্ঘ তা অনুযায়ী
তুলসীপাতা পেস্ট ও কারি পাতা পেস্ট এবং ১বা ২ ফোটা পেপারমিন্ট এসেন্সিয়াল হেয়ার অয়েলও
টক দই
মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরী করে নিন এবার এই পেস্ট স্নানের সময় মাথার চুলের আগা পর্যন্ত ভালো করে মাখান এবং শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত
অপেক্ষা করুন ,শুকিয়ে গেলে ভালোকরে ধুয়ে ফেলুন।এর সাথে সাথে আপনি নিয়মিত তুলসী পাতা
খাবার অভ্যেস গড়ে তুলুন।
চোখের সমস্যা তুলসী পাতা
বাংলা ভাষায় আমরা যে সমস্যাকে
জয় বাংলা বলে থাকি সেই সমস্যা অর্থাৎ চোখ লাল হয়ে যাওয়া ,জ্বালা জ্বালা ভাব ,অল্প সময়ে
প্রত্যেকের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া , চোখের উপর ছোট ওফোড়া বা আঁনচুনি ,ছানিপড়া ইত্যাদি সমস্যা সমাধানের জন্য
তুলসী পাতার রস ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে চোখ ঠান্ডা হবে।
রূপচর্চায় তুলসী পাতার উপকারিতা
বিশ্বমঞ্চে আমরা প্রত্যেকেই চাই যে আমরা যেন সবার চেয়ে সুন্দর /সুন্দরী দেখতে হই, আর সে কারণে পার্লার এর বিভিন্ন কসমেটিক এর সাহায্য নিয়ে থাকি। তবে এতে আমাদের ত্বকের সরাসরি ভাবে ক্ষতি না হলেও পরোক্ষ ভাবে ক্ষতি হয় ,সেই কারণে আমি বলবো আপনি প্রাকৃতিক আয়ুর্বেদিকের সাহায্য নিতে পারেন যেমন তুলসী। তুলসীতে রয়েছে প্রোটিন ,কার্বোহাইড্রেট ক্যালসিয়াম, আয়রন, সোডিয়াম ,পটাসিয়াম, এন্টিব্যাকটেরিয়াল ,এন্টিঅক্সিডেন্ট ,ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস ,ভিটামিন -এ ,কে, সি ,ই, b ৬ ইত্যাদি। যা আমাদের ত্বকের জন্য উপকারী।
আরো পড়ুন : ছেলেদের তৈলাক্ত ত্বক ফর্সা করার উপায় ও গায়ের রং কালো হওয়ার কারণ
ব্রণের জন্য তুলসী পাতা
মূলত মুখে অথবা শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্রনর মতো সমস্যা দেখা দেয় বিভিন্ন ব্যাক্টেরিয়ার কারণে ,তবে আমরা জানি যে তুলসী এন্টিবেক্টেৰিয়াল তাই এক্ষেত্রে তুলসির সাথে পরিমান মতো নিম পাতা র মিশ্রণ পেস্ট করে ব্রণ স্থানে লাগানো যেতে পারে।
মুখের দাগ তুলসী পাতা
ব্রণের চিকিৎসায় তুলসী পাতা, মুখের অনেক পুরোনো দাগছোপ অনেকসময় লজ্জায় ফেলে দেয়, এছাড়া সাম্প্রতিক ও কিছু দাগছোপ নাছোড় বান্দার মতো ছেড়ে যেতেই চায়না। সেইজন্য আমরা তুলসী পাতা ব্যবহার করতে পারি কারণ, তুলসী মুখের টক্সিন বের করে মুখের জেলা ধরে রাখে কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে এন্টিঅক্সিডেন্ট। তুলসীর পেস্ট ও টক দই মিশিয়ে মুখের দাগছোপের উপর লাগান দিনে দুইবার এতে আপনার সমস্যা দূর হবে মাত্র একসপ্তাহে।
আরো পড়ুন : চির জীবনের জন্য ব্রণ এবং ব্রন দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়
তুলসী পাতার অপকারিতা - তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক
তুলসীর উপকারিতা তো জানলাম ,অপকারিতা কি জানেন। না
জানলে জেনে নিন এক্ষনি কারণ তুলসী পাতায় একদিকে
যেমন বিভিন্ন উপকার অন্যদিকে তেমন নানান ক্ষতিকর দিক ও রয়েছে এতে বিপদজ্জনক হতে পারেন
সহজেই তাই সতর্কতা হিসাবে জেনে নেয়া যাক তুলসীর
বিভিন্ন অপকারিতা।
হাইপোগ্লাইসেমিয়া
আপনি যদি হাইপোগ্লাইসেমিয়ার
রোগী হন তাহলে ভুলেও সুগারের ওষুধ তুলসী একসাথে খাবেন না,এতে রক্তের শর্করার পরিমান
কমে যেতে পারে যা আপনার স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর।
গর্ভবতী মহিলা
গর্ভবতী মায়েদের তুলসী খাওয়া
একেবারেই উচিত নয় ,কারণ এতে ইউজেনল নামক একটি উপাদান রয়েছে যা গর্ভকালীন অবস্থায় মেন্সরেশন
ঘটাতে পারে। এতে ডায়ারিয়া সমস্যা হয় ,
অতিরিক্ত তুলসী
অতিরিক্ত তুলসী খাওয়া থেকে
বিরত থাকুন ,এতে রক্তের ঘনত্ব পাতলা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এছাড়া তুলসীর যেহেতু একটু
গরম ভাব রয়েছে সেহেতু এটি পেটে জ্বালাপোড়া
ভাব সৃষ্টি করতে পারে।
মূল কথা
তুলসী তবে ধর্মীয় ভিত্তিতে
পূজিত হয়ে থাকে ,তবে যাই করুন ডক্টরের সাথে পরামর্শ নিয়ে করুন। এতে সমস্যা কম হবে। তবে আরো অনেক কিছুর ক্ষেত্রেও তুলসী বিশেষ উপকারী
,যা পুরো পুরি দেয়া সম্ভব হলোনা।
তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
তুলসী পাতার উপকারিতা
তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক
তুলসী গাছের ছবি
রাম তুলসী পাতার উপকারিতা
মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা
রূপচর্চায় তুলসী পাতার উপকারিতা
তুলসী পাতার বৈশিষ্ট্য
তুলসী পাতার ব্যবহার
তুলসী পাতার অপকারিতা