খেজুরের উপকারিতা (নারী ও পুরুষের যৌন শক্তিতে, বার্ধক্য রোধে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায়)
খেজুরের উপকারিতা, খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা, মধু ও খেজুরের উপকারিতা, শুকনো খেজুরের উপকারিতা, রমজানে খেজুরের উপকারিতা, খুরমা খেজুরের উপকারিতা, আজওয়া খেজুরের উপকারিতা, মরিয়ম খেজুরের উপকারিতা, সেক্সে খেজুরের উপকারিতা, ওজন কমাতে খেজুরের উপকারিতা, খেজুরের উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম, গর্ভাবস্থায় খেজুরের উপকারিতা, দুধ আর খেজুরের উপকারিতা, খেজুরের উপকারিতা ইসলাম, গর্ভবতী মায়েদের জন্য খেজুরের উপকারিতা, সুক্কারি খেজুরের উপকারিতা, দেশি খেজুরের উপকারিতা, এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর সব কিছু এই কন্টেন্টে পরিষ্কার করে লিখে রেখেছি আপনাকে অনুরোধ করবো সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনার মনে থাকা খেজুর নিয়ে সমস্ত ধারণা পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ।
আমাদের গুগল নিউজ পোস্ট গুলি ফলো করুন ☛ Google News
খেজুর একপ্রকার কাঁটাযুক্ত গাছেরফল ,তাই এটি বিশেষত মরু এলাকায় দেখা গেলেও আমাদের ভারত ,বাংলাদেশ , পাকিস্থান এ সামান্য উৎপাদন হয়ে থাকে। বিশেষ করে খেজুর বেশি উৎপাদিত হয় সৌদি আরব ও মধ্য প্রাচ্যের ইরাক ইরান দেশ গুলিতে। তবে খেজুর একটি অত্যন্ত সুস্বাদু ফল আর এই খেজুর নানান পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ,তাই চিনির বিকল্প হিসাবে খেজুর কে চিহ্নিত করা গেছে।
খেজুরের ছবি |
বিভিন্ন প্রকার খেজুর, খেজুরের প্রকারভেদ
পৃথিবীতে প্রায় ৩০০০ প্রজাতির খেজুর রয়েছে, তবে খেজুরের প্রকারভেদ অনুযায়ী তার পুষ্টিগুণ নির্ভর করে। তবে এর মধ্যে কিছু খেজুরের নাম দেয়া হলো –আজওয়া খেজুর,আলজেরিয়ান খেজুর, মেডজুল খেজুর, মাবরুম খেজুর, ডাব্বাস খেজুর, মরিয়ম খেজুর, সাফাওয়ি খেজুর, আম্বর খেজুর, নাগাল খেজুর, খুরমা খেজুর, তিউনিসিয়ান খেজুর, সুক্কারি খেজুর, জাহদি খেজুর, মাসরুক খেজুর, কালমি খেজুর, সুগাই খেজুর, ভিআইপি ইত্যাদি।
তবে আজওয়া খেজুরের যেমন পুষ্টিগুণ তেমন দাম আর সবচেয়ে ভালো খেজুর হলো আজওয়া। বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মেডজুল খেজুর, তবে এই খেজুরকে খেজুরের রাজা বলা হয়ে থাকে। তিনটি পর্যায়ে খেজুরকে শুকানো হয় যা আরবি হয় -কিমরি (কাঁচা ),খলাল (পূর্ণাঙ্গ বা ক্রাঞ্চি ),রুতাব (পাকা ,নরম)তোমার (পাকা ,সূর্যেশুকানো ) বলা হয়ে থাকে।
খেজুরের উপকারিতা সমূহ
1. খুরমা খেজুর
খুরমা খেজুরে বর্তমান রয়েছে আমোনিয়া ,ক্যালোরি ,ভিটামিন-বি ,সি ,আয়রন ,পটাশিয়াম ,ম্যাগনেশিয়াম ,ক্যালসিয়াম ,অ্যামিনো এসিড ,ভিটামিন -কে ও ইন্স্যালুবল ফাইবার ইত্যাদি। আসুন দেখেনই মানবদেহে খুরমা খেজুরের উপকারিতা –
খুরমা খেজুরের উপকারিতা
*আগেই বলেছি খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমানে আয়রন যা আমাদের দেহে রক্তাল্পতা দূর করে তাই রক্তস্বল্পতা থাকলে এই খুরমা খেজুর নিয়মিত সেবন করে যেতে পারে।
*খুরমা খেজুরের উপকারিতা,খুরমা খেজুর খাদ্য হজমে কার্যকরী কারণ এটি স্যলুবল ,ইন্স্যালুবল ও অ্যামিনো এসিডে সমৃদ্ধ যা মানবদেহের দ্রুত পরিপাক সাধনে সক্ষম।
*খুরমা খেজুর ভিটামিন এ যুক্ত হওয়ায় এই খেজুর সেবনের মাধ্যমে দৃষ্টিশক্তির সমস্যা দূর হয়।
*খুরমা খেজুরে থাকা লাংস ক্যাভিটি মানবদেহের মরণ ব্যাধি ক্যান্সার সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে।
*এছাড়াও এই খুরমা খেজুর দেহের উচ্চরক্ত চাপ কমায় ,স্থূলতা হ্রাস ,যৌনতা বৃদ্ধি ,রুচি বাড়াতে বিশেষ সক্ষম ,খুরমা খেজুরে ৮০% চিনি থাকে তাই একে মরুভূমির গ্লুকোজ বলা হয়।
2. আজওয়া খেজুর
ছোট ছোট কালো রঙের আস্তরণ যুক্ত এই খেজুর দেখতে ঠিক জামের মতো হয়ে থাকে তবে এই খেজুর বিশ্বের উৎকৃষ্টমানের খেজুর। এই অজোওয়া খেজুর স্বাদে ও পুষ্টিগুণে অপরিসীম। এতে রয়ে প্রয়োজনীয়ও শর্করা ,আমিষ ,প্রোটিন ,স্বাস্থসম্মত ফ্যাট,খাদ্য আঁশ ,ভিটামিন এ,ভিটামিন বি ৬ , ভিটামিন -কে ,ক্যারোটিন, ফোলেট, নিয়াসিন, থিয়ামিন, রিবোফ্লেভিন ইত্যাদি। সেই কারণে এই খেজুর মানবদেহে বিভিন্ন উপকারে লিপ্ত যেমন-
আজওয়া খেজুরের উপকারিতা
*হৃদপিণ্ডের বিভিন্ন জটিলতা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় যদি , এই খেজুর নিয়মিত খাওয়া যায়।
*এতে ক্যারোটিন থাকায় চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালোরাখার সাথে চোখের বিভিন্ন সমস্যায় ও মোকাবিলা করতে সক্ষম।
*এছাড়া এই বিষক্রিয়া নাশক হিসাবে কাজ করে।
*এতে রয়েছে ৭৭.৫% কার্বোহাইড্রেট যা দেহের নানান রকম ঘাটতি পূরণে সক্ষম।
*রক্তে কোলেস্টেরলের হার কমায় ,যদি নিয়মিত এই খেজুর খাওয়া যায়।
*এতে ক্যালসিয়াম বিদ্যমান হওয়ায় দাঁত ও হাড়ের ক্ষয় রোধ করে।
*আজওয়া খেজুরের উপকারিতা,যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে এই খেজুর।
*এতে ভিটামিন এ ও বি ৬ থাকায় মূলত ফ্যাটের কাজ করে এই খেজুর।
3.মরিয়াম খেজুর
মরিয়াম খেজুরের নাম শোনেননি এমন মানুষ খুবই কম দেখা যায়, এই খেজুর শুকনো অন্নান্য খেজুরের মধ্যে সমবচেয়ে বেশি উপকারী ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। রোজার সময় বেশিরভাগ ইসলাম ধর্মাকলম্বি মানুষ বাংলাদেশ ও ভারতে ইফতার ও সেহেরীতে এই খেজুর বেশি খেয়ে থাকেন। এই খেজুরকে বলা যেতে পারে ভিটামিন ও পুষ্টিগুণের ফ্যাক্টরি ,তাই আসুন দেখে নিই এই মরিয়াম খেজুরের গুনাগুন।
মরিয়াম খেজুরের গুনাগুন, দেশি খেজুরের উপকারিতা,
*১০০ গ্রাম মরিয়াম খেজুরে রয়েছে -৪% ক্যালসিয়াম ,১৩%ম্যাগনেসিয়াম ,আয়রন ৬%,ভিটামিন ১০%,পটাশিয়াম, ৫০ মিলিগ্রাম ,ফ্যাট ০.৪% মিলিগ্রাম ,কোপার ২০ %,সোডিয়াম ২ মিলিগ্রাম ,কার্বোহাইড্রেট ৮০ মিলিগ্রাম। এছাড়াও রয়েছে পলিফেনল,ভিটামিন-সি ,বি ও পটাসিয়াম।
মরিয়াম খেজুরের উপকারিতা
*মারিয়াম খেজুর রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য, কারণ এতে রয়েছে প্রচুর ডায়েটারি ফাইবার।
* দেশি খেজুরের উপকারিতা, এতে ক্যালসিয়াম থাকায় নিয়মিত সেবনের ফলে হাড় ও দাঁত মজবুত রাখে।
*এই মারয়াম খেজুর বহুদিনের কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে রেহাই দিতে সক্ষম কারণ এতে প্রচুর ফাইবার রয়েছে।
* মরিয়ম খেজুরের উপকারিতা,দৃষ্টি শক্তি সুস্থ রাখে ,কারণ এতে ভিটামিন-এ ই সি রয়েছে।
*আয়রন সমৃদ্ধ এই খেজুর রক্তশুন্যতা দূর করে।
*অরুচি দূর করতে এই খেজুর কার্যকরী।
*এতে থাকা সল্যুবল ও ইনসাল্যুবল ফাইবার সহ অ্যামিনো এসিড মানব দেহের বদহজম দূর করার পাশাপাশি খাদ্য দ্রুত হজম হতে সাহায্য করে।
*মুখের ক্যান্সার জাতীয় রোগ দূর করে হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসের যত্ন রাখে এই খেজুর নিয়মিত খাবার ফলে।
*রমজানে খেজুরের উপকারিতা,ইসলাম ধর্মালম্বী মানুষেরা সারাদিন রোজা রাখার ফলে দেখা যায় ইফতারের সময় দেহের গ্লুকোজের ঘাটতি রয়েছে ,এই খেজুর ইফতারের সময় একটু জলের এর সহিত খেলে গ্লুকোজ এর পরিমান বজায় রেখে দেহের শক্তি বাড়ায়।
*ওজন কমাতে খেজুরের উপকারিতা,।
4.সুক্কারি খেজুর
সৌদি আরবের এই খেজুর তার অরিক্ত মিষ্টতার জন্য বিখ্যাত ,সুক্কারুন আরবীতে অর্থ মিষ্টি। হালকা সোনালী রং ও গোলাকার আকৃতির এই খেজুর স্বাদে ও পুষ্টিতে অপরিসীম,তবে এই খেজুর বিশেষ কৌশলে সংরক্ষণ করা হয় সেই কারণে ভারত ও বাংলাদেশে এর চাহিদা থাকলেও বেশিরভাগ ব্যাবসায়ীরা এই খেজুর আমদানি করেন না।
সুক্কারি খেজুরের উপকারিতা
*কিডনি ও লিভার কে সতেজ রাখে এই খেজুর।
*সুক্কারি খেজুর গর্ভকালীন মায়েদের প্রতিনিয়ত খাওয়ালে মৃত্যু ঝুঁকি কমে ও নরমাল ডেলিভারির আশঙ্কা বাড়ায় ,এছাড়া বাচ্চার গ্রোথ ভালো হয়।
* সুক্কারি খেজুরের উপকারিতা,ত্বক ,চোখ এর যত্ন ভালোভাবে নিয়ে থাকে।
*ব্রেস্ট ,ফুসফুস ও অগ্ন্যাশয় এর ক্যান্সার এর মতো ঝুঁকি থেকে মারাত্বক ভাবে রক্ষাকরে স্পাইডার ম্যানের মতো।
*হাড়
ও দাঁত মজবুত রেখে ক্ষয়জনিত সমস্যা থেকে দূরে রাখে ,এছাড়া সুগার বাড়ায় না।
5.শুকনো খেজুর
খেজুর অনেক প্রকারের হয় আগেই বলেছি তবে এর মধ্যে শুকনো খেজুর এর জনপ্রিয়তা ও চলাচল রয়েছে ভারত ,বাংলাদেশ ও পাকিস্থান প্রমুখ দেশে। তবে এই শুকনো খেজুর কিন্তু বিশেষ করে বিভিন্ন রোগ সারাতে শুকনো খেজুর কার্যকরী। এছাড়াও চিকিৎসা বিজ্ঞানে রোগথেকে মুক্তি পেতে শুকনো খেজুর এর উপকারিতা অপরিসীম চিহ্নিত করা হয়েছে। তাই সুস্থ থাকতে প্রতিদিন ৫টি করে শুকনো খেজুর খান।
শুকনো খেজুরের গুনাগুন,
এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে আয়রন ,পটাসিয়াম,ক্যালসিয়াম ,ম্যাগনেসিয়াম ,ভিটামিন -কে ,সি ,বি ,প্রোটিন ,আয়রন ,ফাইবার ,এন্টিঅক্সিডেন্ট ,লিউটেন,জিক্সাথিন ,আজ ফসপরাশ ,জিঙ্ক ,ফ্রুকটোজ ,গ্লাইসেমিক ইত্যাদি ভরপুর।
শুকনো খেজুরের উপকারিতা
*শুকনো
খেজুর খেলে চোখের রেটিনা ভালো থাকে ,কারণ এটিতে লিউটেন ও জিক্সাথিন বিদ্যমান।
*এটি ফ্রুক্টোজ ও গ্লাইসেমিক সমৃদ্ধ হওয়ায় মানবদেহের রক্তের শর্করার পরিমান বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
*প্রচুর পরিমানের আয়রন সমৃদ্ধ এই খেজুর দেহের রক্তের পরিমান বৃদ্ধি করে।
*কোষ্টকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর হয় এই খেজুর নিয়মিত খাবার ফলে।
*এতে এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় শুকনো খেজুর।
*শুকনো খেজুরের উপকারিতা,ডায়াবেটিস রোগীদের অন্যান্য খেজুরের বদলে শুকনো খেজুর খাওয়া উপকারিতা প্রমানিত হয়েছে।
*এই শুকনো খেজুরে রয়েছে ২০-৩০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেশিয়াম তাই এটি নিয়মিত খাবার ফলে উচ্চরক্ত চাপ কমে যায়।
*এছাড়াও
চিনি অপছন্দকারী ব্যক্তি চিনির বদলে শুকনো খেজুর খেতে পারেন।
ইসলামিক মতে খেজুরের উপকারিতা
আজ থেকে বহু বহু বছর আগে আল্লাহের তরফ থেকে প্রেরিত আলকুরআন শরীফে খেজুর কে জান্নাতি ফল বলা হয়েছে তার সাথে সাথে খেজুরের নানান রকম উপকারিতা তুলে ধরা হয়েছে,তবে যদিও তখন বিজ্ঞান ছিল অনেক পিছিয়ে তার আগেই বিশ্বনবী খেজুরের গুনাগুন বর্ণনা করে গেছেন। এতক্ষন উপরে বৈজ্ঞানিক মতামত দিয়েছি ,এবার আসুন দেখে নিই বহু বহু বছর আগে বিশ্বনবীর খেজুর সম্পর্কিত মতামত। এছাড়াও হজরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রিয় খাবার ছিল খেজুর ,আবার খেজুর খাওয়াকও বিশ্বনবীর সুন্নতও ধরা হয়।
*পুষ্টিগুণে ভরা খেজুরের বর্ণানা করতে গিয়ে বিশ্বনবী (সঃ )বলেছেন -
"হজরত সাদ ইবনে আবি ওক্কাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন -রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু এলাহী ওয়া সাল্লাম বলেছেন ,যে বেক্তি প্রতিদিন সকালে সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে ,সেই বেক্তিকে কোনো বিষ বা জাদু ক্ষতি করতে পারবেনা "(বুখারী ও মুসলিম )
*আল্লাহু তালা বলেন 'খেজুর বৃক্ষ ও আঙ্গুর ফল হতে তোমরা মধ্যম ও উত্তম ফল তৈরী করে থাকো। নিশ্চই এতে বোধ সম্পন্ন জাতির জন্য নিদর্শন রয়েছে'(সূরা আল নাহল :৬৭)
* খেজুরের উপকারিতা ইসলাম,আনাস( রাযিয়াল্লাহু আনহু)থেকে বর্ণিত ,রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম )ছালাতের (মাগরিব )পূর্বে কয়েকটি তাজা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। তিনি তাজা খেজুর না পেলে শুকনা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। আর যদি তাও না পেতেন তাহলে কয়েক ঢোক পানি পান করতেন।
*হজরত আয়শা (রা:)থেকে বর্ণিত তিনি বলেন ,হজরত রসূল (সা:) বলেছেন ,নিশ্চই মদিনার আজওয়া খেজুর রোগনিরাময়কারী ও প্রাত :কালীন প্রতিষেধক। (সহিহ মুসলিম )
ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে খেজুরের উপকারিতা
ডায়াবেটিস রোগে এখন বিশ্বের প্রায় বেশিরভাগ মনুষই আক্রান্ত হচ্ছে ,আর তখন ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্যতালিকা থেকে ব্যাড পরে যাচ্ছে মিষ্টি ,সেজন্য রোগীসহ আত্বীয় দের একটা প্রশ্ন থেকেই যায় 'খেজুর খাওয়া যাবে কিনা ?'অথবা মিষ্টি খেতেও অনেকসময় ইচ্ছে হয়ে থাকে। আসুন জেনে নিই ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে খেজুর প্রযোজ্য কিনা।
খেজুর মিষ্টি জাতীয় ফল হলেও এটি নানান পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ,যেকোনো খেজুর এক্ষেত্রে রোগী খাওয়া চলবে কারণ আগেই বলেছি এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার ,খনিজ ,ভিটামিন ইত্যাদি তাই এটি স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো। তবে এতে প্রচুর ফাইবার থাকায় রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে ,এতে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও ইন্সুলিন সিক্রেটে অগ্নাশয়ের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে ,ডায়াবেটিস রোগের নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসায় সহায়তা করে।
এছাড়াও ডায়াবেটিস বিষজ্ঞরাও এই পরীক্ষা করার জন্য ১০ জন ডায়াবেটিস আক্রান্তকে ৪ সপ্তাহে নিয়মিত ১০০ গ্রাম খেজুর খাইয়েছিল ,তাতে ৪ সপ্তাহ পরে দেখা যায় রোগীদের মধ্যে কারো ব্লাড গ্লুকোজ বাড়েনি ও রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রাও ঠিক ছিল তাই এক্ষেত্রে ডায়াবেটিস রোগীরা খেজুর খেতে পারে তবে বেশি নয়।
আমাদের অন্য পোস্ট : ডায়াবেটিস কি,এর লক্ষণ,চিকিৎসা ও রোগীর খাদ্য তালিকা
তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অত্যান্ত প্রয়োজনীয়।
সেক্সে খেজুরের উপকারিতা
আমাদের দেহের মৌলিক চাহিদার মধ্যে একটি হলো সেক্স অথবা যৌনতা ,সেক্ষেত্রে যদি আমরা সেই যৌনক্ষমতায় না পারদর্শী হয় তাহলে জীবনসঙ্গীর কাছে লজ্জায় পরে যাই এছাড়া নিজেরাও তৃপ্তি পাইনা। আজকাল এই মেশিনের দুনিয়ায় সবকিছুই নকল সেক্ষেত্রে ভেজাল খাদ্যাভ্যাসের জালে জড়িয়ে পড়া আমরা মানুষেরা দৈহিক চাহিদা গুলিতেই অক্ষম হয়ে পড়ছি ধীরে ধীরে।
তাই আবার সতেজ যৌনতা ফিরিয়ে আনতে হলে আমাদের ওপরওয়ালার দেয়া উপহার গুলির মধ্যে থেকে শ্রেষ্ট খেজুর কে নিয়মিত খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে যুক্ত করে নেয়া উচিত। আমরা জানি খেজুরের গুনাগুন নানান রোগ সারাতে ও মানুষের দৈহিক নানা উপকারে অব্যর্থ ঔষধ হিসাবে কাজ করে , তবে হয়তো আমরা এটা জানিনা যে খেজুর আমাদের সেক্স বাড়াতে বিশেষ উপকারী। আসুন বিস্তারিত জেনে নিই-
সেক্সে খেজুরের উপকারিতা,খেজুরে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা পুরুষের লিবিডো বাড়িয়ে যৌন স্বাস্থের উন্নতি করে। প্রাকৃতিক অ্যাফ্রোডিসিয়াক হওয়ায় বিশেজ্ঞরা যৌনচিকিৎসার সাহায্যের জন্য রোগীর ডায়েটে খেজুর রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
খেজুরে এস্ট্রাডিওল ও ফ্ল্যাভোনয়েড সমৃদ্ধ সে কারণে এটি প্রাকৃতিক ভায়াগ্রা নামেও পরিচিত ,এটি পুরুষের উর্বরতা ,যৌন হরমোনের সর্বোচ্চ স্তরকে প্রভাবিত ,শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি,তাড়াতাড়ি বীর্যক্ষরণ রোধ ও যৌনগতিশীলতা বৃদ্ধিতেও সক্ষম। দৈনন্দিন জীবনের মানসিক চাপ ,কাজের ঝুঁকি ,ও নানান চিন্তায় বর্তমানে পুরুষের শুক্রাণুর হ্রাস ঘটছে সে কারণে নিয়মিত খেজুর খাবার ফলের যৌনসমস্যা দূর হবে।
যৌন
বৃদ্ধিতে খেজুর খাবার সঠিক নিয়ম –(রাতে খেজুর টুকরো টুকরো করে জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে খাওয়া যেতে পারে। (৭-৮)বিশেষত
খালি পেতে খেজুর খেলে কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।) *এখনকার
খেজুর সংরক্ষরণের জন্য নানা রকম ক্যামিক্যাল দেয়া হয় তাই খাবার আগে ভালো করে ধুয়ে নেয়া
উচিত। নব্য বিবাহিত পুরুষ হোক অথবা দীর্ঘদিনের বৈবাহিক সম্পর্কের আটকে পড়া পুরুষ হোক,
যে কেউ এই অসীম গুনাগুন যুক্ত ফল সেক্স বাড়াতে সঠিক নিয়মে নিয়মিত ১ মাস খেজুর খায় তাহলে
ফলা ফল নিশ্চিত।
অতীতে যুগ যুগ ধরে মানুষ জন সেক্সের যেকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য খেজুর কেই বেশি ব্যবহার করতো ,সেই জন্য বিশেষজ্ঞরা একটি পরীক্ষার মধ্যে নিশ্চিত হয় ও বিভিন্ন সমস্যা যেমন-(লিঙ্গের ক্ষমতা বাড়াতে ,শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়াতে ,দ্রুত বীর্যপাত থেকে রক্ষা পেতে ,ইত্যাদি )তে এই খেজুর ও তার তেল কে ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
গর্ভবস্থায় খেজুরের উপকারিতা
গর্ভবস্থায় প্রত্যেক নারীর সাথে সাথে তার পরিবারের ও সচেতন থাকা জরুরি এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন গর্ভবতী মায়ের মানসিক ও দৈহিক দিক।
তাছাড়া এসময় প্রত্যেক নারীকে খাবার উপর বিশেষ নজর দিতে হবে নিয়ম মতো খাদ্য খাবার না খেলে আগত প্রাণের দৈহিক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। স্বাস্থকর ও সুষম খাদ্যের পাশাপাশি শুকনো জাতীয় খাবার বেশি খাওয়া উচিত যেমন -খেজুর,বাদাম ,কিসমিস ইত্যাদি।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উপকারি হলো খেজুর ,কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে আয়রন,ভিটামিন সি ,বি ,পটাশিয়াম ,ম্যাগনেসিয়াম ,প্রোটিন ,ফাইবার ,আয়রন ,এন্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি। যার ফলে -
*আয়রন থাকায় মা ও শিশুর দেহের প্রয়োজনমতো অক্সিজেন ও রক্ত সরবরাহের সাথে রক্তের পরিমান বৃদ্ধি করায়।
*ফাইবার যুক্ত খেজুর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হতে সাহায্য করে।
*ক্যালসিয়াম যুক্ত হওয়ায় খেজুর শিশুর হাড় ও দাঁত শক্ত করে ভিটামিন এ সরবরাহ করে ভ্রূণের বিকাশ ঘটাতে সহায়তা করে।
* গর্ভাবস্থায় খেজুরের উপকারিতা,খেজুর পটাসিয়াম যুক্ত হওয়ায় মায়ের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
*খেজুর খাওয়ার ফলে হাঁপানি হওয়ার আশঙ্কা কমে।
* মায়ের জরায়ুর পেশি শক্তিশালী হয় ও মসৃন ভাবে নরমাল প্রসব হয় ,এছাড়া প্রসবের পর রক্ত ক্ষরণের আশঙ্কা থাকেনা নিয়মিত খেজুর খেলে।
* গর্ভবতী মায়েদের জন্য খেজুরের উপকারিতা,খেজুরে প্রচুর পরিমাণে লক্সেটিভ থাকায় মায়ের প্রসব কালে সহজে জরায়ু সঙ্কোচন ও প্রসারণের কাজ করে মায়ের প্রসব যন্ত্রনা অল্প হলেও সহজ হয়।
মধু ও খেজুরের উপকারিতা
আমরা এতক্ষন
জেনেছি শুধু খেজুরের উপকারিতা তবে এবার আমরা জন্য মধু ও খেজুর একসাথে খেলে কি ধরণের
উপকার পাওয়া যায় ,তার জন্য মধুর উপকারিতা সম্পর্কে পরে আসুন আমাদের আরো একটি
আর্টিকেল এ--- জেনে নিন মধুর গোপন কিছু উপকারিতা
খেজুর যে
তার নানান গুনে সমৃধ্য তা আমরা জানলাম আর মুর গুনাগুন সম্পর্কে কিছুটা হলেও আমরা জানি
,এই দুই প্রাকৃতিক উপাদান আমাদের কত উপকারে আসে আসুন দেখে নিই।
পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূরীকরণ
খেজুরের উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম,মধু ও ৫-৬
টি খেজুর প্রতিদিন খালি পেতে খেলে পুরুষের
শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে,এতে নিঃস্বন্তান দম্পতি তাড়াতাড়ি সন্তান লাভের সম্ভাবনা
বৃদ্ধি পাবে।
*শিশুর কাশি
ও হাঁপানি দূর করতে
মধুর সাথে
খেজুর গুঁড়ো করে একসাথে মিশিয়ে শিশুর কাশি অথবা হাঁপানি থাকলে খালি পেটে ১-২ চামচ খাওয়াতে পারেন। এতে উপশম হবে,এক্ষেত্রে
বোড়োদের এই ধরণের সমস্যা থাকলে মধু ও খেজুর খেতে পারে সমস্যা নেই।
*রক্তচাপ
ও ডায়াবেটিসের মতো সমস্যায় এই মধু ও খেজুর পান করতে পারে তবে সীমিত ,এতে উপশম হবে।
*মধু ও খেজুরের উপকারিতা,দৃষ্টি শক্তি
সঠিক রাখতে মধুও খেজুর খান।
*হাড় ও দাঁত
মজবুত রাখতে খেজুর ও মধু খাওয়া যায়।
*কোষ্ঠকাঠিন্য
দূর করতে খেজুর ও মুধুর কার্যকারিতা অপরিসীম।
*দেহের জলের
অভাব দূর করতে খেজুর ও মধুর গুনাগুন অসীম।
*দৈহিক শক্তি
বৃদ্ধি করতে সক্ষম।
*তারুণ্য
ধরে রাখে।
*যৌনশক্তি বৃদ্ধি করে।
দুধ ও খেজুরের উপকারিতা
দুধ খেতে
আমরা অনেকেই পছন্দ করি ,তবে দুধের পুষ্টিগুণ যেমন আমরা জানি খেজুরের পুষ্টিগুণ আমরা
জেনে এসেছি এতক্ষন। তবে আমরা অনেকেই জানিনা যে দুধ খেজুর একসাথে খেতে কিধরনের উপকার
পাওয়া যায় তাই দেখে নিই।
দুধ ও খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমানে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা চামড়া টান টান রাখার সাথে সাথে মুখের ব্রণ ,ফুসকুড়ি জনিত সমস্যা দূর করে।
একগ্লাস দুধে ৩-৪ টি খেজুর দিয়ে একসাথে এই পানীয় পান করলে পেট অনেক্ষন ভরা থাকে ও দেহের ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজ এর চাহিদা পূরণ করে।
দুধে যেমন আয়রন সমৃদ্ধ তেমনি খেজুর এ ও আয়রন সমৃধ্য তাই রক্তাল্পতার মতো সমস্যা দূর হবে এই পানীয় নিয়মিত পান করলে।
দুধ আর খেজুরের উপকারিতা,অতিরিক্ত চুল পড়ার হাত থেকে রেহাই দেয় এই পানীয়।
গরম দুধের সাথে ৪-৫ টি শুকনো খেজুর গুঁড়া মিশিয়ে রাতে খেলে পুরুষের অন্ডকোষের রক্তসঞ্চালনা ভালো হয় ফলে সহবাসের সময় শুক্রাণুও সুন্দর ভাবে পরিচালিত হবে ,এতে নিঃসন্তান দম্পতি এর সন্তান লেভার সম্ভাবনা থাকে।
দীর্ঘদিনের গাঁটের ব্যাথার ক্ষেত্রে উপযোগী এই পানিও পানের ফলে গাঁটের ব্যাথার উপশম হয় ,তবে নিয়মিত এই পানীয় পান করতে হবে।
অগ্নাশয়ের পরিপাকতন্ত্রের কার্যক্ষমতা সহজ ,হজম এর ক্ষমতা কে সহজ করে দিয়ে গ্যাস ও কোষ্ঠকাঠিন্যের থেকে দূরে রাখে মানব দেহকে।
এই পানীয়
নিয়মিত পান করলে দৃষ্টি শক্তি সম্পন্ন রোগ ব্যাধি থেকে নিরাময় পাওয়া যায়।
খেজুরের অপকারিতা
খেজুরের অসীম
গুণাবলী থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের বিপদ ও নিয়ে আসে , তাই খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা, দুটি দিক রয়েছে। বিশেষ ভাবে যারা ডায়াবেটিস,সুগার এর মতো রোগে আক্রান্ত তারা ডক্টরের সাথে অবশ্যিই পরামর্শ করে খেজুর খান ,আর
হ্যা দিনে মোটামুটি ৮-৯ টি খেজুরের বেশি না খাওয়া ভালো। তাছাড়া খেজুর গুলি সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় তাই খেজুর খাওয়ার
আগে ভালো করে ধুয়ে নিন।
শেষ কথা
খেজুর অত্যন্ত্য সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল ,এর গুনাগুন গুলি অনেক রিসার্চ করে ও বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা, সম্বন্ধে বিস্তারিত উপরে উল্লেখ করলাম । আমাদের লেখার মধ্যে যদি কোনো ধরণের ভুল ত্রুটি থেকে থাকে, তাহলে নিজগুনে ক্ষমা করবেন এবং আমাদের ভুল ত্রুটি ধরিয়ে দেবেন contact us পেজ গিয়ে অথবা আমাদের ওয়েবসাইট এর কমেন্ট অপশন এ গিয়ে আপনার নিজস্য মতামতটি জানাবেন। আপনি যদি এই আর্টিকেল থেকে সামান্যতম উপকৃত হতে পারেন তাহলে নিজেকে ধন্য মনে করবো। আমাদের এই আর্টিকেল টি পড়ে যদি ভালো লাগে কমেন্ট এ জানাবেন। আর আপনি কি বিষয়ে আর্টিকেল চান সেটা ও জানাবেন।