ধোসা/দোসা, সাম্বার ডাল ও নারকেলের চাটনি বানানোর রেসিপি বাংলা

 ধোসা মূলত দক্ষিণ  একটি  খাদ্য হলেও  এখন প্রায় পুরো ভারত তথা বাঙালিদের পছন্দের খাবার হয়ে উঠেছে  ধোসা রেসিপি। কারণ স্বাদে গুনে অপরিসীম  এই ধোসা খেলে যে কোনো মানুষের মন শরীর অন্য স্বাদের রাজ্যে প্রবেশ করবে ,মনে হবে যেন এক অন্য রকম সুস্বাদু খাদ্য যা খেলে জীবন ধন্য।

ধোসা/দোসা, সাম্বার ডাল ও নারকেলের চাটনি বানানোর রেসিপি বাংলা, এর পুষ্টিগুণ ও খাওয়ার  উপকারিতা 

ধোসা/দোসা, সাম্বার ডাল ও নারকেলের চাটনি বানানোর রেসিপি বাংলা
Dosa recipe

আর খাদ্য রসিকদের কথা বলতে গেলে তো আর লেখাই  শেষ হবেনা দোসা রেসিপি বাংলা খাদ্যরসিক মানুষেরা  ধোসা রেসিপি,খেয়ে আনন্দে বলে ওঠে ধোসার  বিকল্প নেই এবং তাঁর সাথে সাম্বার ডালের রেসিপি, নারকেলের চাটনি বানানোর রেসিপি।আমাদের জিহ্ববা যখন এই সুস্বাদু দোসা রেসিপি, সাথে পরিচিত হবে তখনি জিহব্বার অনুভূতি  হবে বহুদিনের প্রেমের মতো কারণ তখন জিহ্ববা  বার বার এই দোসা রেসিপি বাংলা,স্পর্শ পেতে  চাইবে। তাছাড়া এটি তৈরিতে খুব একটা ঝামেলা নেই বললেই চলে চাইলেই সহজে বানানো যায় এই স্বাদে ভরপুর ছোট ,বড়ো সবার  পছন্দের মশলা ধোসা

আরো পড়ুন : রান্নার রেসিপি পিজ্জা তৈরির উপকরণ

এবার আসুন দেখে নেই এই মশলা ধোসা , তৈরির পারফেক্ট নিয়ম দোসা বানানোর পদ্ধতি

উপকরণ 

ইন্ডিয়ান দোসা রেসিপি,ধোসা রেসিপি,.দুই কাপ পরিমানের আতপ চাল ,.এক কাপ পরিমানের সিদ্ধ চাল ,.এক কাপ পরিমানের বিউলির ডাল ,.এক চামচ মেথি ,.নুন ,.সাদা তেল ,.দুই কাপ পরিমান পেঁয়াজ কুচি ,.-৬টি সিদ্ধ আলু ,.দুটি টমেটো কুচি ,১০.এক মুঠো চীনা বাদাম ,১১.এক মুঠো কারী পাতা ,১২.দু-তিনটি কাঁচা লঙ্কা কুচি ,১৩.এক কাপ ধোনে পাতা কুচি ,১৪.শুকনো লঙ্কা দুটি ,১৫.এক চামচ সর্ষে ,১৬.হলুদ গুঁড়া ,১৭.লঙ্কা গুঁড়া ,১৮.হাফ চামচ হিং ,১৯.একটু আদা গ্রেট করে রাখা ,২০. সাম্বার মশলা,মশলা ধোসা

আরো পড়ুন :রান্নার জন্য কোন তেল ভালো ও স্বাস্থ্যকর উপকারী

প্রণালী 

আতপ চাল সিদ্ধ চাল ভালো করে ধুয়ে ১৪ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন। বিউলির ডাল - ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন। মেথি ভালো করে ধুয়ে ভিজিয়ে রাখুন প্রায় - ঘন্টা। এবার ভালো করে ভেজানোর পর আতপ চাল সিদ্ধ চাল একসাথে ভালো করে ধুয়ে নিয়ে পেস্ট করুন মিহি করে। ধোসা রেসিপি,এরপর আগে থেকে ভেজানো বিউলির ডাল মেথি একসাথে ভালো  করে ধুয়ে মিহি করে পেস্ট করুন। মনে রাখবেন এই পেস্ট যেনো ঘন প্রকৃতির হয়। এই দুটি পেস্ট একসাথে করে এতে সামান্য  পরিমান জল দিয়ে ভালো করে ফেটিয়ে নিন।

 অন্য পোস্ট :ডায়াবেটিস কি, এর লক্ষণ, চিকিৎসা ও রোগীর খাদ্য তালিকা 

 এবার এই  মিশ্রণ টি ভালো  করে ঢাকা দিয়ে অন্ধকার গরম জায়গায় ১৪ ঘন্টার মতো রেখে দিতে হবে (শীত কাল হলে সেক্ষেত্রে ২৪ ঘন্টা রাখতে হবে )তারপর সেই মিশ্রণ টি  ১৪ ঘন্টা পর বের করলে দেখা যাবে এটি খুব সুন্দর ভাবে ফুলে যাবে এবং মিশ্রনের উপরে একটা মোটা আস্তরণ পড়বে।এবার এই মিশ্রণ টি আবার একটু ফেটিয়ে নিয়ে স্বাদ মতো লবন একটু জল যোগ করে মিশ্রণটি খুব পাতলা আর খুব ঘনো না করে এর মদ্ধবর্তী অবস্থায় রাখুন।

 অন্য পোস্ট :খিদে না পাওয়ার কারণ  ও খিদে পাওয়ার উপায়

একটা কড়াই তে একটু সাদা তেল দিয়ে তাতে দুটি  শুকনো  লঙ্কা আগে থেকে রাখা সর্ষে দিয়ে একটু ভেজে নিন এরপর এতে একে একে হিং, পেঁয়াজ দিয়ে ভালো ভাবে ভাজলে যখনএকটু লাল হয়ে আসবে তখন তাতে আগে থেকে কেটে রাখা টমেটো,চীনা বাদাম ,গ্রেট করে রাখা আদা  পরিমান মতো লবন দিয়ে অল্প আঁচে মিনিট মতো ঢাকা দিয়ে রাখুন। 

এবার  ঢাকা খুলে টমেটো গুলো  খুন্তি দিয়ে ঘেঁটে দিয়ে আঁচের ফ্রেম বাড়িয়ে দিন এবার এতে  আগে থেকে গ্রেট করে রাখা সিদ্ধ আলু ,পরিমান মতো লঙ্কা গুঁড়ো,হলুদ গুঁড়ো ,কারী পাতা ,ধোনে পাতা কুচি ,লঙ্কা কুচি সাম্বার মশলা  দিয়ে  ভালো  করে কষিয়ে নিয়ে নামিয়ে নিন ধোসা রেসিপি

এবার একটা তাওয়াতে একটু সামান্য তেল ব্রাস করে ভালো ভাবে তাওয়া টি গরম করুন ,গরম হয়ে গেলে এতে ধোসার সেই মিশ্রণ টি পাতলা করে গোল তাওয়ার মতো লেপটিয়ে দিন,এবার এতে  একটু একটু সাদা তেল মাঝে মাঝে উপর থেকে ছিটিয়ে দিন। 

 একটু পর দেখবেন আস্তে আস্তে এই তাওয়ার উপরে লেপ্টানো ধোসার রং যখন মাঝের দিকে একটু লাল হয়ে আসবে তখন এর উপর  সেই আলু কষা আস্তে আস্তে করে লম্বা আকৃতিতে রাখুন। এবার দেখুন এই ধোসা তাওয়া থেকে নিজেই একটু একটু  ধারের দিক থেকে উঠতে শুরু করবে এই সময় আপনি এই ধোসাটি খুন্তি মুড়ে তুলে নিয়ে গরম গরম  সার্ফ করুন ,ওহ সরি  সার্ফ করার জন্য তো নারকেল আচার সাম্বার দল লাগবে। আসুন দেখেনিই সাম্বার ডাল নারকেল আচার তৈরির আসল রেসিপি।

নারকেলের চাটনি বানানোর রেসিপি

এই নারকেলের চাটনি বানানোর রেসিপি সাধারণত ধোসা ইডলির সাথে খাওয়া হয়। এছাড়াও সাধারণ ভাবে এটি খাওয়া যেতে পারে ,তবে এই  নারকেল এর চাটনি আমি সাজেস্ট করবো ধোসা অথবা ইডলির সাথে খাবার জন্য আসুন দেখে নেয়া যাক রান্নার রেসিপি।

উপকরণ

নারকেল কুরানো ,আগে থেকে ভিজিয়ে রাখা কাঁচা চানা ছোলা ,আগে থেকে ভেজানো কাঁচা বাদাম ,কারী পাতা ,আদা ,কাঁচা লঙ্কা ,লবন ,টক দই ,জল ,কালো সরষে ,শুকনা লঙ্কা ,সাদা তেল ,তেজ পাতা ,হিং ,বিউলির ডাল।

প্রণালী

সর্ব প্রথমে পরিমান মতো নারকেল কুরানো ,আগে থেকে ভিজিয়ে রাখা কাঁচা চানা ছোলা ,আগে থেকে ভেজানো কাঁচা বাদাম ,কারী পাতা ,আদা ,কাঁচা লঙ্কা ,লবন ,টক দই ,জল একসাথে দিয়ে ভালো করে মিহি ভাবে পেস্ট করে নিতে হবে।

আরো পড়ুন : নারকেল ও কৎ বেলের চাটনি

এবার একটা  তারকা  কড়াইতে  অল্প আঁচে একটু সাদা তেল গরম করে এতে  একে  একে শুকনো লঙ্কা ,কালো সরষে ,তেজ পাতা ,বিউলির ডাল হিং দিয়ে ভালো ভাবে ভেজে নিন। কড়া করে এই তর্ক ভাজা হলে এটি সেই নারকেল এর পেস্ট এর সাথে এই তরকা দিয়ে আবার পেস্ট করেনিতে হবে। এবার তৈরী আপনার নারকেল চাটনি। এই নারকেলের চাটনি বানানোর রেসিপি,পরিবেশন করুন ধোসার  সাথে।

নারকেল চাটনি তো রেডি তবে শুধু নারকেলের চাটনি বানানোর রেসিপি,হলে তো আর হবেনা চাটনির সাথে বিখ্যাত সাম্বার রেসিপি ডাল চাই। অনেকে তো সাম্বার রেসিপি ডাল ছাড়া ধোসা খেতেই পারেননা ,তাই আপনার জন্য রইলো এই দক্ষিণ ভারতীয় সুস্বাদু সাম্বার ডাল।

সাম্বার ডাল রেসিপি

উপকরণ সাম্বার রেসিপি

সাম্বার ডাল ,হলুদ গুঁড়া ,লবন ,লঙ্কা গুঁড়া ,সাদা তেল ,মেথি ,শুকনো লঙ্কা ,রাই অথবা কালো সরষে দানা ,কারী পাতা ,হিং ,পেঁয়াজ ,কাঁচা লঙ্কা ,টমেটো ,সব্জি (মিষ্টি কুমড়া ,বিনস ,বেগুন ,সজনে ডাটা ,আলু ,গাজর ),সাম্বার মশলা ,গরমজল ,তেঁতুল জল ,চিনি তৈরী করুন সাম্বার রেসিপি,

প্রণালী

আগে থেকে ভালোকরে ধুয়ে ভিজিয়ে রাখা অড়হর ডাল এর সাথে হলুদ গুঁড়া ,লবন পরিমান মতো ,লঙ্কা গুঁড়া ,সামান্য সাদা তেল ,পরিমান মতো জল দিয়ে সিদ্ধ করে নিতে হবে ,তবে দেখতে হবে ডালটা যেন খুব নরম ভাবে সিদ্ধ না হয়।

অন্য পোস্ট :খিচুড়ি রান্নার রেসিপি

এবার একটা কড়াই তে সাদা তেল ভালো করে গরম করে নিয়ে এতে একে একে শুকনা লঙ্কা ,মেথি ,রাই অথবা কালো সরষে দানা ,কারী পাতা ,হিং ,বড়ো বড়ো করে কুচিয়ে রাখা পেঁয়াজ ,পরিমান মতো লবন ,হলুদ গুঁড়া ,লঙ্কা গুঁড়া ,সাম্বার মশলা ,কাঁচা লঙ্কা কুচি ,বড়ো করে কুচিয়ে রাখা টমেটো দিয়ে ভালো করে ভেজে নিতে হবে তবে দেখতে হবে যাতে পেঁয়াজ যেন খুব একটা পুড়ে না যায় ,পেঁয়াজ লাল করে ভাজলে হবে। 

এই মশলা গুলি ভাজা হলে এতে আগে থেকে  চৌকো করে কেটে রাখা  যে কোনো সব্জি তবে আমি সাজেস্ট  করবো মিষ্টি কুমড়া ,বিনস ,বেগুন ,সজনে ডাটা ,আলু ,গাজর  দিয়ে আরো একটু কষিয়ে নিতে হবে। এবার এতে চাইলে গরম জল দিয়ে ঢাকা দিতে পারেন এতে সব্জি গুলি তাড়াতাড়ি  সিদ্ধ হবে।  আর এমনি অল্প ফ্রেমে কষিয়ে  নিতে পারেন এতে সিদ্ধ দেরি হবে। 

যাইহোক সব্জিগুলি সিদ্ধ হলে এগুলি সেই ডাল সিদ্ধর সাথে যোগ করে এতে তেঁতুল জল ,চিনি পরিমান মতো গরম জল দিয়ে আরো একটু সিদ্ধ করে হবে ,সিদ্ধ হয়ে হয়ে গেলে আপনি এটি ডাল ঘাটুনি দিয়ে ঘেঁটে দিন তবে  খেয়াল রাখতে হবে ডাল যেন খুব ঘনো খুব পাতলা না হয়ে মাঝামাঝি ঘনত্বের হয়।

এবার পুরো  পুরি ধোসা খাওয়ার জন্য তৈরী সাম্বার রেসিপি  নারকেল চাটনি। এবার সপরিবারে দক্ষিণ ভারতীয় স্টাইলে ধোসা খান আর পুষ্পা সিনেমা দেখতে থাকুন। কারণ দক্ষিণের খাবারের সাথে দক্ষিণের সিনেমা খুব ভালো জমবে।  

ধোসা তো খাবো তবে ধোসার সার্বিক কিছু উপকারিতা দেখে নেয়া যাক

 ধোসার উপকারিতা

এই দক্ষিণের খাবার যেমনি জনপ্রিয় তেমনি গ্রহণযোগ্য হয়ে  উঠেছে সারা ভারতে। জনপ্রিয়তা বাড়ার অন্যতম কারণ হলো এই ধোসার  উপকারিতা ,মানবদেহে  নানা রকম রোগপ্রতিরোধের সাধে সাধে বিভিন্ন দৈহিক উপকারেও কার্যকরী।

.দৈহিক শক্তি বাড়াতে

যেহেতু এটি  আতপ চাল ,সিদ্ধ চাল , বিউলির ডাল দিয়ে তৈরী তাই এতে কার্বোহাইড্রেডের পরিমান বিপুল যা আমাদের দেহের শক্তি বাড়ানোর সাথে সাথে এনার্জির ঘাটতি পূরণ করে। তাই দৈহিক শক্তি বাড়াতে সকালের প্রাতরাশে রাখতে পারেন এই খাবার।

অন্য পোস্ট :জেনে নিন মধুর গোপন কিছু উপকারিতা

.হার্ট ভালো রাখতে

এটি যেহেতু নামমাত্র তেলে তৈরী তাই স্যাচুরেটেড ফ্যাট নেই বললেই চলে। আর স্যাচুরেটেডফ্যাট যেহেতু হার্ট এর পক্ষে ক্ষতিকর তাই ধোসা আমাদের হার্ট ভালো রাখার দায়িত্ব বহন করছে।

.ওজন কমাতে

ধোসা যেহেতু সবরকম সব্জি অল্প তেলে  তৈরী তাই এটি খেলে পেট ভরবে কিন্তু ওজন অথবা বাড়তি ক্যালোরি বাড়বেনা তাই আপনি বাড়তি ভুঁড়ি বাড়ার চিন্তা না করে অনায়াসেই এটি খেতে পারেন। এছাড়াও ডায়েট চার্টে   রাখতে পারেন সুস্বাদু এই মশলা ধোসা।

.হাড়, দাঁত চুলের শক্তি বাড়াতে

এই ধোসায় প্রোটিন ক্যালসিয়াম এর উপাদান প্রচুর পরিমানে রয়েছে কারণ এটি নানা বিধ সব্জি ,পুষ্টিকর উপাদানে তৈরী। যা আমাদের শরীরের দাঁত,চুল হাড় এর ক্ষয় রোধের সাথে সাথে শক্তিশালী করতেও সহযোগিতার হাত বাড়ায় মশলা ধোসা।

 অন্য পোস্ট :চুল লম্বা না হওয়ার কারণ ,ঘন করার উপায় ও তেলের নাম

       ধোসা যখন আমরা সাম্বার নারকেল এর চাটনির  সাথে খাই তখনই আমাদের জিহ্ববা সুস্বাদু স্বাদের রাজ্যে প্রবেশ করেনা বরং এর সাথে সাম্বার চাটনির প্রোটিন ,ভিটামিন -সি ,বিভিন্ন খনিজ সহ আরো পুষ্টিকর উপাদান প্রবেশ করে যা দৈহিক না জটিলতা দূর করে আমাদের সুস্থ রাখে।

 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url

Adsence

Adsence