দিনে কয় ঘন্টা পড়া উচিত ও পড়াশোনা করার নিয়ম
আমরা প্রত্যেকে আলাদা আলাদা ক্লাসে পড়ি দিনে কয় ঘন্টা পড়া উচিত ও পড়াশোনা করার নিয়ম জানা উচিত । আর পড়াশোনা আমাদের জীবনের সফলতার অন্যতম ধাপ। আমাদের ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে পড়াশোনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর আমাদের ভবিষ্যত গঠনে জন্য মন দিয়ে পড়াশোনা করা আমাদের কর্তব্য। পড়াশোনা করার রুটিন, এই কর্তব্য পালনের জন্য আমরা প্রত্যেকে আপ্রাণ চেষ্টা করি, তবে মাঝে মধ্যে অমনোযোগীর কারণে আমরা এই ধাপ পেরোতে ব্যর্থ হই।
study rules |
কিভাবে পড়াশোনা করলে ভালো রেজাল্ট করা যায়,আমাদের অমনোযোগীর নানা প্রকার কারণ রয়েছে যেমন -মোবাইল ফোন , খেলা ধুলা ,অলসতা ,প্রেম বিষয়ক ,সামাজিক ,পারিবারিক ,অর্থনৈতিক ও ভয় ইত্যাদি। প্ররতিদিনই আমরা ভাবি কাল থেকে মন দিয়ে পড়বো ,আর যখন আমরা পড়তে বসি দশ মিনিটেই ক্লান্ত হয়ে যাই এবং নানা রকম চিন্তা আমাদের মাথায় পাক খেতে থাকে। তখনই মনে হয় আজ থাক কাল থেকেই খুব মন দিয়ে পড়বো। এই ভাবে যখন সারাবছর কেটে যায় তখন বছরের শেষে ফলাফল বের হলে ক্ষতি আমাদেরই হয়।
ছাত্র জীবনে সফল হওয়ার উপায় ও মূলমন্ত্র
প্রতিদিন বই পড়ার গুরুত্ব উপকারিতা ও প্রয়োজনীয়তা
কিভাবে স্মার্ট হওয়া যায়, স্মার্ট হওয়ার সহজ কিছু উপায়
মন নিয়ন্ত্রণ ও আত্মনিয়ন্ত্রণ করার উপায়
দিনের ১২টি ভালো অভ্যাস যা আপনাকে সুস্থ রাখবে এবং মন থাকবে সতেজ
এবার বলি কিসের ভয়ের কথা বললাম। ভয় টা হলো ,পড়া না পারার ভয়। দেখো আমরা কঠিন চ্যাপ্টার কে অনেক সময় ভয় পেয়ে বই বন্ধ করি ফলে আমাদের মস্তিস্কও অলস হয়ে যায় ,এই ভাবে আমাদের অলসতা বাড়তেই থাকে। তাই আমরা পড়তে বসলেও পড়ায় আমাদের মন বসেনা।
এই সমস্যার সমাধানের জন্য আজকের আমার এই সহজ ও গোপন টিপস যা আপনাদের পড়াশোনা থেকে পালাতে নয় পড়াশোনাকে ভালোবাসতে শেখাবে। আমাদের এই টিপস ফলো করুন দেখবেন শুধু বছরের শেষে নয় জীবনের শেষেও ট্রফিটা আপনার। কারণ শিক্ষাই জীবনের মূল মন্ত্র।
দিনে কয় ঘন্টা পড়া উচিত ও পড়াশোনা করার নিয়ম
১. মোবাইল দূরে রাখা
আপনি যখনই পড়তে বসবেন আপনার ফোন সাইলেন্স মোড এ রাখুন। পারলে অফ করুন ,সব থেকে ভালো হয় যদি আপনি আপনার ফোনটি পড়ার সময় টুকু আপনার থেকে দূরে রাখেন। এর ফলে আপনার পড়ার সময় কোনো ডিসটারবনেস আসবেনা। এতে আপনার পড়ায় মন বসতে বাধ্য।
২.নির্দিষ্ট জায়গা নির্বাচণ
পড়ার জায়গা আরাম দায়ক হয় তাহলে পড়ায় মন বসার চেয়ে ঘুমে মন বসবে তাড়াতাড়ি। যেমন ধরুন -বিছনা ,সোফা ইত্যাদি। আপনার পড়ার জায়গা বিছনা অথবা সফা নয় তো ? যদি থেকে তাহলে তাড়াতাড়ি পরিবর্তন করুন। সারাদিন পড়াশোনা করার উপায়, আপনি চেয়ার টেবিল অথবা মেঝেতে পড়ার অভ্যাস করতে পারেন। এতে করে আপনার অলসতা দূর হওয়ার সাথে সাথে পড়ায় মন বসবে অবশ্যই।এতে করে আপনার অলসতা দূর হওয়ার সাথে সাথে পড়ায় মন বসবে অবশ্যই।
এর সাথে সাথে যত পারবেন আপনার পড়তে বসার জায়গাটি যেন নির্জন হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখা অবশ্যই জরুরি। কারণ এটি পড়ে মন বসতে অন্যতম একটি গাইরুত্বপূর্ণ উপাদান কারণ নীরব স্থান পড়তে বসার উপযুক্ত জায়গা ,এর প্রভাবে ব্রেইন নিশ্চিন্তা , নির্ঝঞ্ঝাট ও অবিভ্রান্ত্র ভাবে পড়া নিজের মধ্যে ইনপুট /প্রবেশ করায়। যার ফলে দীর্ঘদিন এই পড়া সংক্রান্ত তথ্য আমাদের মস্তিষ্কে সঞ্চিত থাকে।
৩.মন ফ্রেস রাখুন
সবসময় নিজের মন কে পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন। কারণ মন পরিষ্কার থাকলে তবেই ব্রেন পরিষ্কার থাকবে। আর পরিষ্কার মাথায় সহজে কঠিন পড়া প্রবেশ করবে ,ফলে পড়ায় মন বসাতে খুব একটা কঠিন হবেনা। আপনার মন এমনিতেই পড়ার জন্য আনচান করবে। মন পরিষ্কার রাখতে দরকার হলে -মেডিটেশান /যোগব্যায়াম ,পসিটিভ চিন্তা ,সৎ আত্মীয়দের সাথে কথা বলা ,হিংসা, পরনিন্দার মতো মানসিক রোগ যাতে না জন্ম নেয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখা।এতে আপনার মন ওব্রেইন দুটোই পরিষ্কার হবে যা পড়তে বসার জন্য অথবা পড়া মুখস্ত হওয়ার জন্য বিশেষ দরকারি।
৪. সঠিক সময় নির্ধারারণ
পড়াশোনা করার নিয়ম, প্রত্যেক স্টুডেন্টের মস্তিস্ক পাওয়ার ও শরীরএকই রকম হয়না। তাই প্রত্যেকের পড়ার সময় আলাদা আলাদা ভাবে পছন্দ করে। নিজেরা নিজেদের সুবিধা মতো পড়তে পারে তবে এক গবেষণায় জানা গেছে যে - পড়াশোনা করার সঠিক সময়, গভীর রাট ও ভোর রাত এ পড়া শরীর ও মনের জন্য বিশেষ ভাবে উপকারী।
এছাড়াও এই সময় আমাদের
ব্রেইন খুবই পরিষ্কার ও সচল থাকে
যার কারণে অনেক দিনের জমে থাকা পড়া ও তাড়াতাড়ি ব্রেইন
বুঝে নিতে সক্ষম হয়। এবং আশেপাশের পরিবেশ ও নিস্তব্ধ হয়
যা পড়ার উপযুক্ত সময় বলা যেতে পারে। তাই সবসময় চেষ্টা করবে এই সময় টা তে যে
যে পড়া বুঝতে অসুবিধা হয় শুধু মাত্র
সেই পড়া গুলো পড়তে এর সাথে সাথে
নতুন অথচ একটু কঠিন যে চ্যাপ্টার সেটাও
পড়তে কারণ এই সময় টি
বেশি উপযুক্ত।
৫. পড়ার জন্য দরকারি সরঞ্জাম একত্র করা
আমরা
যখন পড়তে বসি তখন ১০-১৫ মিনিট পড়ার
পর এক এক করে
মন পরে -এই যা পেন
টা আনা হয়নি ,ওহঃ একটু জল
খাই গলাটা শুকিয়ে যাচ্ছে। এরকম টা হয়ে থাকে।
এর ফলে বার বার পড়ার মনোযোগ নষ্ট হয়। তাই যাতে বার বার বই ছেড়ে উঠতে
না হয় সেই কারণে
পড়তে বসার সময় প্রয়োজনীয় রাখতে হবে। এতে
পড়াশোনা করার নেশা কনসেনট্রেট নষ্ট হবেনা।
৬. অলসতা ত্যাগ
অলসতা
হলো এমন একটি গুন্ যা মানুষের অন্ধকারে
ঠেলে দেওয়ার কাজ টি খুব ভালো
ভাবে করে। কারণ অলস ব্যাক্তি জীবনে কোনোদিন সফল হতে পারেনা।
তবে প্রত্যেক ব্যাক্তির মধ্যে একটা অলসতা কাজ করে ঠিক ই তা কিন্তু
কম বেশি। যে ব্যাক্তি অলসতা
কে ত্যাগ করে
কর্মক্ষম হবে সেই ব্যাক্তিই ভবিষ্যতের উজ্জ্বলতা অর্জন করবে। আর তা যদি
শিক্ষার্থী রা করতে পারে
তবে তো কোনো কথাই
নেই। তাই আমরা অলসতা ত্যাগ করার
জন্য সব সময় একটিভ
থাকার চেষ্টা করবো। এর ফলে অলস
ভাবটা একটু দূরে থাকবে। এছাড়াও
আমরা এমন কাজ করবো না যাতে আমাদের পড়ার সময় অলস
ভাবটা আমাদের স্পর্শ করতে পারে।
৭.বুঝে পড়া
মুখস্থ হলো একটি বাজে অভ্যাস। এর কারণে যেকোনো সময়েই আমরা পড়া ভুলে যেতে পারি। তাই এর চেয়ে বুদ্ধির কাজ হলো বুঝে বুঝে পড়া পড়াশোনা মনে রাখার উপায়। মুখস্থ করার চেয়ে বুঝে পড়লে পড়া ভুলে যাওয়ার চান্স কম থাকে। আপনি পড়া ঠিক মতো বুঝেছেন কিনা দেখার জন্য নিজে ভালো করে বুঝে নিয়ে অন্যকে বোঝানোর চেষ্টা করুন। এর ফলে এক্সাম এর সময় দুবার করে পড়া না পড়লেও চলবে। সহজেই পড়া আপনার আয়ত্তে চলে আসবে। তাই সবসময় বুঝে পড়ার চেষ্টা করবেন।
৮.ব্রেক অথবা বিরতি নেওয়া
একটানা সারাক্ষন পড়া আবার খারাপ। এতে আমাদের ব্রেইন বেশি চাপে পরে যায় যা আমাদের মন ও শরীর দুটোকেই ডিপ্রেশনে ফেলে। তাই পড়া তো দূর কথা পড়ার কথা মনে পড়লে একটা ভয় কাজ করবে। এই জন্য আমরা নিয়ম করে আমাদের ব্রেইন কে বিরতি দেব। সর্ব প্রথম আমরা ১০ মিনিট পড়বো এবং ২০ মিনিট ব্রেইন কে ব্রেক দেব। এরপর আস্তে আস্তে ব্রেকটাইমটা এক মিনিট একমিনিট করে কমাবো।
শেষে একমিনিট ও ব্রেকটাইম থাকবেনা ফলে আমরা ধীরে ধীরে পুরো সময়টা পড়ার কাজে লাগাবো। একসময় দেখবেন আপনি পড়তে ভালোবেসে ফেলবেন সহজেই। আপনি কি জানেন ? দিনে কয় ঘন্টা পড়া উচিত, কম করে তো দিনে ১০ ঘন্টা -১৫ ঘন্টা পড়া উচিত। তাই আপনি এই সময়য়ের কাছা কাছি পড়া শোনা করার চেষ্টা করবেন। তখন আপনার পড়া ছাড়া আর কিছু ভালো লাগবেনা ,পড়ার নেশা লেগে যাবে। আর হ্যাঁ যখন আপনি বিরতি নেবেন সেই সময় টুকুই শুধু মাত্র বিশ্রাম নেবেন কোনো রকম মোবাইল ঘাটা ,টিভি দেখা অথবা একড্ডা দেয়া চলবেনা। এতে আপনার ব্রেইন ফ্রেস হবেনা বরং অন্য দিকে মনোযোগ গিয়ে আপনার পড়ার মুড্ নষ্ট হয়ে যাবে।
৯.পড়ার তালিকা তৈরী
পড়ার সময় একটা সাবজেক্ট তালিকা তৈরী করুন। এরপর যে জায়গায় আপনার সবসময় চোখ পড়ে সেখানে রুটিনে টি রাখুন। এইজন্য আপনি প্রত্যেক টা বিষয় আলাদা আলাদা ভাবে পড়লে পড়ার সুবিধা হওয়ার সাথে সাথে সুন্দর ভাবে আপনি পড়ার পরিবেশের সাথে অব্ভস্থ হবেন। এবং রুটিনের সাথে আপনি এক্সাম এর একটি মিনিমাম মার্ক্স নাম্বার বোরো করে লিখে রাখুন। কারণ যখনি আপনার চোখ ওই জায়গায় যাবে তখনিই আপনার মনে পড়ার জন্য একটি পীড়া সৃষ্টি হবে যা আপনাকে পড়ার জন্য অনুপ্রাণিত করবে।
একটা কথা
না বললেই নয় -পড়াশোনা হলো আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। যে ধাপ গুলি
সঠিক ভাবে পারাপার করতে না পারলে আমাদের
ভবিষ্যত অন্ধকার কূপের মত হবে। পড়াশোনা
যদি আমরা মন দিয়ে করি
তাহলে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সাথে সাথে আমরা একেকজন ভালো মানুষ হওয়ার ও অঙ্গীকার রাখি।
তবে সমাজগত বিদ্যার চেয়ে ও পুঁথিগত বিদ্যার বিশেষ
প্রয়োজন। তাই
আমরা শিক্ষা গ্রহণের সময় টা সঠিক ভাবে
ব্যাবহার করার বিশেষ ভাবে চেষ্টা করব।