মন নিয়ন্ত্রণ ও আত্মনিয়ন্ত্রণ করার উপায়
আমরা আমাদের প্রতিদিনের কাজের চাপে হোক অথবা পরিবারের সমস্যা, শারীরিক অক্ষমতার কারণে অনেক সময় হতাশ হয়ে পড়ি। তখন আমাদের জীবনের দৈনন্দিক কাজের ও ভবিষ্যতের উপরে সেই হতাশার ছায়া পড়ে। এবং আমরা অসফল অর্জন করি যা সম্পূর্ণ নির্ভর আমাদের মন না নিয়ন্ত্রণ করার উপরে। মানুষের সফলতার পিছনে সব থেকে বড়ো কারণ হলো আত্মনিয়ন্ত্রণ। যে মানুষ বিপদ, সমস্যা, চাপ কে পরোয়া না করে নিজের মন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সে সফলতা অর্জন করতে খুব একটা সময় নেয় না। তাই আমরা সবসময় চেষ্টা করবো নিজের মন কে নিয়ন্ত্রণে রাখা।
মন নিয়ন্ত্রণ ও আত্মনিয়ন্ত্রণ করার উপায়
১. প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করুন
ইচ্ছা শক্তি ও মন নিয়ন্ত্রণ করার সবথেকে কার্যকরী উপায় হলো প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করা। আমরা সবাই জানি ব্যায়াম করলে শরীরের জন্য এক্সারসাইজ হয়। কেবলমাত্র শরীরে নয় ব্যায়ামের আরোও একটি ভালো দিক হলো মন ভালো থাকে , মনের কার্য ক্ষমতা সচল থাকে, নিজের মন কে বশে আনা যায়, মনের শক্তি বৃদ্ধি পায় আত্মনিয়ন্ত্রণের উপায়।
২. প্রতিদিন বই পড়ার গুরুত্ব, উপকারিতা ও প্রয়োজনীয়তা বুঝুন
আপনি কি জানেন বই পড়ার কতগুলি উপকারিতা আছে। পৃথিবীতে যত বিশিষ্ট বিশিষ্ট জ্ঞানী, গুণী ব্যাক্তিগন এসেছেন সকলে এই নিয়মের সাথে জড়িত ,তাই আপনার যদি প্রতিদিন কিছু পড়ার অভ্যাস থেকে থাকে তাহলে আপনার মানসিক বিকাশ হবে তার সাথে সাথে স্মৃতিশক্তি ও জ্ঞানার্জনে ভান্ডার তৈরি হবে। নিজের মনের মতো করে সবকিছু ভাবতে পারবেন। নিজেকে নিজের নিয়ন্ত্রণ করার সক্ষমতা তৈরী হবে।
৩. কথা বলার থেকে বেশি বেশি ভাবুন
আমাদের জীবনে কথাবার্তা অনেক গুরুত্বপূর্ণ আমাদের মন ভালো রাখার জন্য বলি বা নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য। আপনি যদি কারোর সাথে ভালোভাবে কথা বলেন তাঁর সাথে বন্ধুত্ত্ব হতে পারবেন মনে শান্তি থাকবে, মনের উৎফুল্লতা আসবে , মন শান্ত থাকবে, মন নিয়ন্ত্রেণে থাকবে। আর এর বিপরীত টা একবার ভাবেন, আপনার কথা বার্তায় যদি কেউ কষ্ট পে বা আপনি যদি কারো কথা বার্তায় কষ্ট পান , কারোর বলা কথা যদি আপনার ভালো না লাগে , সেখান থেকে মতবিরোধ তৈরী হবে হিংসা, রাগ, কেনা কেনই সৃস্টি হবে। কারণ একটা অসহ্যকর কথা তীরের থেকে ও বেশি আঘাত করে। আর এই রাগ হিংসা অনেক ভয়ঙ্কর ধারণ করে যা আপনি চাইলে ও আপনার মনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন না অনেক সময়। তাই আপনাকে ভালোভাবে কথা বলার কৌশল গুলি জেনে নিতে হবে, বলার থেকে বেশি বেশি ভাবতে হবে নিজে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য।
৪. যে যার ধর্মানুযায়ী প্রার্থনা করুন
মন নিয়ন্ত্রণ ও আত্মনিয়ন্ত্রণ করার উপায় বেশিরভাগ পন্ডিতগণ নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করেন মেডিটেশন করে। এই পদ্ধতিতে মন স্থির হয়, শান্ত হয় , নিয়ন্ত্রণে থাকে। কিন্তু আধুনিক সমাজ সাধারণত মেডিটেশন আমরা কেউ করিনা। তাই আপনি যেই ধর্মের মানুষ হন না কেন সেই ধর্মের নিয়ম মেনে প্রার্থনা করলে মেডিটেশন হয়ে যাবে। স্থির হওয়ার উপায় ,এতে করে আপনার মন শান্ত হবে, মনে শান্তি আসবে চঞ্চল মন শান্ত করার উপায়।
৫. সময়ের সাথে নিজেকে উন্নত করুন
হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন নিজের মনকে কন্ট্রোল রাখার সর্বোত্তম উপায় হলো সময়ের সাথে সাথে নিজেকে পরিবর্তন করা। কারণ আমাদের মন প্রতি সেকেন্ডে ভাবনা চিন্তা পরিবর্তন করে আর সময় ও প্রতি মুহূর্ত পরিবর্তনশীল, সময়ের সাথে সাথে মনের পরিবর্তন না হলে সামন্জস্যহীন হয়ে পড়বে। এবং মনের দুর্বলতা আসবে তাই মন নিয়ন্ত্রণ করার অন্যতম কারণ সর্বদা সময়ের সাথে শান্ত মনে উন্নত ভাবনা চিন্তা করা।
৬. নির্দিষ্ট পরিমান ঘুমান
ঘুম আসার কারণ ও ঘুমানোর প্রয়জন প্রায় প্রতিটি প্রাণীর দৈনিক রুটিন। ঘুমের ঘাটতি ঘটলে শারীরিক ক্ষতির যেমন আশংকা থাকে। ঠিক তেমনি মানসিক সমস্যা হবে মেজাজ খিট খিটে , তীক্ষ্ণ মেজাজ , বড় মেজাজ , রাগ ইত্যাদি মনের রোগ জন্ম নেবে। মন শান্ত করার উপায় তাই মনকে শান্ত ও নিয়ন্ত্রণ করার অন্যতম কারণ উপায় ঘুম।
আরও পড়ুন : ঘুম আসে না কেন এবং ঘুম বৃদ্ধির উপায়
৭. দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকুন
ডিপ্রেশন বা দুশ্চিন্তা এমন একটি রোগ যা আমাদের মনকে একেবারে নিয়ন্ত্রণের বাইরে ঠেলে দেয়। আপনি না পারবেন ভালোভাবে খেতে, না পারবেন ভালোভাবে ঘুমাতে এমন একটি খতরনাক মানুষ এর মনে দুশ্চিন্তা বাসা বাঁধলেই সে যদি না ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির উপায় খুঁজে না পায়, তাহলে সে মানসিক রোগীতে পরিণত হতে পারে। তখন সে মানুষটির মাথা কাজ করবে না এবং কি করবে না করবে সিদ্ধান্ত্ নিতে ও সমস্যা হবে তাই মন নিয়ন্ত্রণ ও আত্মনিয়ন্ত্রণ করার উপায় মন কে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য দুশ্চিন্তা থেকে কিভাবে দূরে থাকা যায় তার উপায় ফলো করুন। দরকার হলে কাছের মানুষ দের কে জিজ্ঞাসা করুন ও তা না হলে বিভিন্ন ওয়েবসাইট এর টিপস ফলো করুন।