সুন্দর কথা বলার কৌশল, (মীটিংয়ে,অপরিচিত, বা মেয়েদের সাথে)
সুন্দর করে কথা বলার কৌশল, না জানলে আপনি কোথাও পাত্তা পাবেন না। আমরা সাধারণত মাত্র ১ বছর বয়সে কথা বলতে শিখি কিন্তু ভালো ভাবে কথা বলার কৌশল, জানতে সারা জীবন লেগে যায়। ভালোভাবে কথা বলতে পারাটা একটি স্কিল (Communication Skill ), এই স্কিল এর উপর আপনি যত দক্ষ হবেন আপনি তত সম্মান, মর্যাদা, ব্যবসা, বাণিজ্যে উন্নতিকরণ করতে পারবেন। আপনি যদি অপরিচিত কিংবা মিটিংএ বা মেয়েদের সাথে কথা বলতে চান সেগুলি ও ভালোভাবে শিখে নিতে হবে।
সুন্দর
কথা বলার কৌশল
১. আত্মবিশ্বাসের সাথে কথা কথোপকথন করুন (How to talk confidently)
জীবনে সফল হওয়ার অন্যতম উপায় হলো আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠা। এই অভ্যাস অনেক সাধ্যের পর এসে থাকে। একজন আত্মবিশ্বাসী মানুষ কেবলমাত্র সুন্দর কথা বলার কৌশল, ছাড়া ও অনেক কিছু জয় করতে পারে। আত্মবিশ্বাসীর অর্থ হলো সাহসিকতা, উচ্চস্বরে, ভদ্রতা,নম্রতার সাথে কথা বার্তায় স্মার্ট থাকার উপায়, ও ইতিবাচক থাকা। আত্মবিশ্বাসী ব্যাক্তির মাঝে কোনো ভয় ভীতি, নেতিবাচক কোনো দিক থাকতে পারে না। মেয়েদের সাথে কথা বলার টপিক,নিজেকে এইভাবে শ্রোতার কাছে প্রকাশ করতে পারলে সে আপনাকে বিশ্বাস করতে পারবে, গুরুত্ব দিবে এবং আপনার বলা কথা গুলি মনোযোগ দিয়ে শুনবে।
২. সহজ সরল ভাষায় কথা বলুন (Easy speaking)
সহজ
ভাষার অর্থ হলো স্বাবাভিক,সরল,সিধা,অনায়াসগম্য, সহোদর,বা জন্মগতভাবে। এখন
বলবো মানুষ হাজার হাজার ভাষায় কথা বলে , আপনি যাকে কিছু বলবেন বা আপনার যে
শ্রোতা তার ভাষায় সে যা বোঝে
সেই ভাষায় সহজ সরল ভাবে বলতে পারলে সে আপনার কথা
শুনবে নইলে বিরক্ত বোধ করবে। তবে একই ভাষার মধ্যে অনেক অর্থ থাকে আপনি কঠিন অর্থ জানলে ও সব জায়গায়
প্রয়োগ করবেন না। সর্ব সাধরণের কাছে সহজ সরল ভাষায় কথা বলবেন তাঁরা বুঝতে পারবে আপনার বলা কথা গুলো এবং আপনার বোঝাতে ও সুবিধা হবে।
তাই ভালোভাবে কথা বলার কৌশল হলো কঠিন কঠিন অর্থের ভাষা গুলি এড়িয়ে যাওয়া ভালো। Advance communication
skill.
আরও পড়ুন : দিনের ১২ টি ভালো অভ্যাস যা আপনাকে সুস্থ রাখবে এবং মন থাকবে সতেজ
৩. নিজেকে ভালো শ্রোতা তৈরী করুন (How to start a conversation with anyone)
আমরা
সবাই লক্ষ্য করেছি কি জানিনা, কেউ
যখন কথা বলে তাঁর দিকে নজর দিয়ে থাকলে বা তাঁর প্রতি
একটু ঝুকে থাকলে তার মনে এই ধারণা তৈরী
হয় সে যা বলছে
তার কথার প্রতি শ্রোতা অনেক আগ্রহী। তার কথা বলার সময় আপনি যদি অমনযোগী থাকেন যেমন ফোন ঘাটা ঘাটি বা অন্য কিছু
কাজে করেন তাহলে সে কি বলছে
সেটা ভালোভাবে বুঝতে পারবেন না। এবং
তাঁর মনে এই ধারণা জন্মাবে
তার কথা গুলো কেউ শুনছে না ,তার কথা বলার ইচ্ছাটা হারিয়ে ফেলবে। আপনার ক্ষেত্রে ও একই ধারণা
হবে। আরো ও একটি ভালো
পয়েন্ট আপনি যদি আপনার বিপরীত ব্যাক্তির প্রতি মনোযোগ দেন তার কথা গুলি ভালোভাবে বুঝে শুনে, মূল পয়েন্ট গুলি নিয়ে তার সাথে কথা বললে তাঁর মনে এই ধারণা জন্মাবে
সে ভাববে তাঁর কথার মূল্য দিয়েছি , তখন সে আপনার সাথে
বেশি বেশি কথা বলার চেষ্টা করবে।
৪. সঠিক এবং সুস্পষ্ট উচ্চারণ করুন ( How to speak powerfully and clearly )
আপনি যেই ভাষায় কথা বলেন না কেন সেই ভাষাটি সঠিকভাবে সু স্পষ্ট উচ্চারণ করলে, আপনার যে শ্রোতা থাকবে তাঁর শুনতে এবং বুঝতে কোনোরকম অসুবিধা হবে না এবং বিরক্ত বোধ করবে না আপনার কথার প্রতি আরোও বেশি আগ্রহী হবে। জোরে কথা বলার কৌশল,আর আপনি যদি সঠিক স্পষ্ট উচ্চারণ করতেই না পারেন তাহলে আপনি এক বলবেন আর ওপর ব্যাক্তি আর এক শুনবে এতে করে সমস্যার সৃষ্টি হবে এবং আপনার কথা মতো বুঝতে না পারে তাহলে তো তার শোনার ইচ্ছাটাই হারিয়ে ফেলবে।
৫. বুদ্ধিমত্তার সাথে জায়গানুপাতে কথা বলুন ( Talk smartly )
আপনি যদি আপনার কথা বলার দ্বারা মানুষকে আকৃষ্ট করতে চান তাহলে আপনার কথা বলার ধরন, ভাবভঙ্গি ও বুদ্ধি থাকাটা খুবই জরুরি। আপনাকে অনেক জানতে হবে যে বিষয় নিয়ে কথা বলবেন সেই বিষয়ের কথা বলার মতো জ্ঞান থাকতে হবে। স্মার্টলি কথা বলা,কখন , কোথায়, কার ,কি বলতে হয় এগুলোর প্রতি ধারণা রাখতে হবে, কোন কথা বললে রেগে জেতে পারে, এক কোথায় বুঝে শুনে কৌশলে সুন্দরভাবে কথা বলতে হবে। ধরেন আপনি একটি মৃত্যু বাড়িতে গিয়েছেন আর আপনার পরিচিত মানুষের সাথে রসিকতার সাথে কথা বলছেন এই রকম করলে চলবে না। তাই জায়গানুপাতে বুদ্ধিমত্তার সাথে সদা সর্বদাই কথা বললে মানুষ আপনার কথা বলার প্রতি আগ্রহী হবেন।
৬. সহযোগিতার কাজে সমাধানের কথা বলুন (অপরিচিত কারো সাথে কথা বলার কৌশল)
পৃথিবীর প্রায়ই সব মানুষের সমস্যা থাকে আর তার সমাধানের জন্য কারোর না কারোর সাহায্য নিয়ে থাকে। অপরিচিত কারো সাথে কথা বলার কৌশল, এই রকম কারোর সমস্যায় আপনি সঠিকভাবে সমাধানের সু-পরামর্শ দিতে পারেন। তাহলে আপনি একজন বিশাসী, নির্ভরযোগ্য ব্যাক্তি হয়ে উঠবেন তাঁর কাছে। তাই ভালোভাবে কথা বলার জন্য আপনি বিভিন্ন বিষয়ের জ্ঞান সংগ্রহ করে রাখতে পারেন মানুষের সহযোগিতার পরামর্শ দেয়ার জন্য। আপনি বই পড়ার উপকারিতা ও প্রয়োজনীয়তা জানলে, বই পড়ার প্রতি অনেক আগ্রহ খুঁজে পাবেন কারণ প্রতিদিন বই পড়ার মাধ্যমে জীবনে অনেক জ্ঞানার্জন করতে পারবেন যা আপনার কথা বলার কৌশলের জন্য সহযোগিতা করবে অচেনা মানুষের সাথে কথা বলার উপায়।
৭. মাতৃ ভাষায় স্মার্টলি কথা বলুন (communication with someone)
আপনার যদি অনেক ভাষার জ্ঞান থেকে থাকে তাও আপনি আপনার মাতৃ ভাষাকে ব্যবহার করুন এবং আঞ্চলিকতা টান এড়িয়ে চলুন। শুদ্ধ বাংলা ভাষায় কথা বলা,আপনার মাতৃ ভাষায় খবর, পত্রিকা, নিউস পেপার, টিভি চ্যানেল গুলিতে যেভাবে স্মার্টলি ভাষা ব্যাবহার করা হয় সেইরকম ভাষা ব্যবহার করুন। তা নাহলে একই ভাষা আঞ্চলিকতার পার্থক্য ভাষা বুঝতে সমস্যা হয়।
আরও পড়ুন : কিভাবে স্মার্ট হওয়া যায়
৮. সঠিক এবং সুস্পষ্ট মতামত বিশ্লেষণ করুন(ways to improve communication skills)
আপনার
কথা গুলি বিশ্বস্ততা অর্জন করা এবং শ্রোতা কে আগ্রহী করানোর জন্য বিস্তারিত তথ্য দিয়ে
শ্রোতাকে যুক্তি সহকারে সঠিক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবেন। এতে করে শ্রোতার প্রতি আপনার
যোগাযোগ ভালো(communication build up ) তৈরী হবে।
৯. নম্র, ভদ্রতার সাথে কথার মাঝে gap রাখুন (Speaking tips in Bengali)
গুছিয়ে
কথা বলার কৌশল, আপনি
যখন কথা বলবেন খুব বেশি তাড়াহুড়ো করবেন না। ধীর, স্থির ভাবে থেমে থেমে কথা বলুন এতে
করে আপনার কথা বলার বিষয় গুলি মনে আসবে আর
আপনি শ্রোতাকে গুছিয়ে পরিপূর্ণ বিশ্লেষণ করতে পারবেন,
১০. শ্রোতাকে ভালোভাবে বুঝে তাঁর পছন্দের প্রশংসনীয় কথা বলুন (Simple rule to talk)
পৃথিবীর
সব মানুষ চায় তাকে কেউ প্রশংসা করুক। আপনি যদি আপনার শ্রোতাদের মন মানসিকতা বুঝে শুনে
প্রশংসনীয় বিষয় নিয়ে কথা বলতে পারেন, তাহলে আপনি যদি সারাদিন এই ভাবে কথা বলেন আপনার
শ্রোতারা সারাদিন আগ্রহের সাথে শুনতে বাধ্য হবে।
১১. কথা বলার বিষয়টি আগে থেকে ধারণা রাখুন (মিটিং এ কথা বলার কৌশল)
আপনি
কারোর সাথে কথা বলার আগে থেকে প্ল্যান করুন। আপনি
যদি কোনো মিটিং এ বক্তৃতা রাখতে
যান কোন বিষয়ে কথা বলবেন অথবা মূল কথার মাঝে কোন কোন বিষয় রাখলে ভালো হয় ( out of knowledge ), সেখানকার মানুষজনদের মাঝে কোন বিষয় নিয়ে কথা বললে তাদের মনে জায়গা করে নেওয়া যায়, এই গুলি নিয়ে
আগে থেকে প্ল্যান তৈরী করে রাখবেন। অথবা
কোনো ইন্টারভিউতে যাওয়ার আগে প্রশ্নকারী ব্যাক্তিকে কিভাবে গুছিয়ে কথা বললে তাঁরা ইম্প্রেশন হবে সেগুলি নিয়ে আগে থেকে একটু ভাবনা চিন্তা করুন।
১২. বডি ল্যাঙ্গুয়েজে ঠিক রাখুন এবং শ্রোতার সাথে আই কানেক্ট করুন (Body language and eye connect )
আপনি যেই পরিস্তিতে কথা বলবেন সেখানে বডি ল্যাঙ্গুয়েজে সঠিক রাখবেন, কিভাবে বডি ল্যাঙ্গুয়েজে ঠিক করা যায়, গুগল, ইউটুবে সার্চ দিলে পরিপূর্ণ ধারণা পেয়ে যাবেন। ধরুন আপনি একটি ইন্টারভিতে (Interview )যাওয়ার পর বডি স্টেট্ রাখুন, এবং সর্বদা মনে রাখবেন শ্রোতার সাথে আপনার যেন কানেক্ট থাকে। মিটিং এ কথা বলার কৌশল, ধরুন আপনি কথা বলছেন আর শ্রোতা অন্য কাজে মন তাহলে অনর্থক। এই পরিস্তিতে শ্রোতাকে একটি প্রশ্ন করতে পারেন, আপনার উত্তর দেয়ার জন্য তাদের একটি আগ্রহ থাকবে। আর আপনি সর্বদাই হাসিমুখে শ্রোতার চোখে চোখ রেখে কথা বলার চেষ্টা করবেন।