জেনে নিন মধুর গোপন কিছু উপকারিতা

 

অতি প্রাচীন কাল থেকে মধুর ব্যবহারের উপকারিতা অসীম। মধুকে মহারোগের মহাশক্তির ঔষধ বলা হয়।  খাদ্য তালিকায় পুষ্টিগুণের বিচারে প্রথম সারির খাদ্য হলো মধু, এর উপকারিতা গুণাবলীর শেষ নেই। আমাদের জন্ম থেকে আমৃত্যু পর্যন্ত বিভিন্ন রোগ ব্যাধি সংক্রমিত হয়ে থাকে সকল কার্যে এর ব্যবহার উপকারিতা বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা মহলে উঠে এসেছে বিভিন্ন ফুলের পরাগ রেনুর নির্যাস সংগ্রহ করে মৌমাছি তার থেকে মধু তৈরী করে এর গুণমান উপাদান বিশাল পরিমানে রয়েছে। মধু খাওয়ার নিয়ম উপকারিতা মধুতে অবস্থিত কিছু উপাদান উপকারিতা নিচে আলোচনা আলোচনা করেছি

জেনে নিন মধুর গোপন কিছু উপকারিতা

health benefits of honey



মধুর উপাদান

মধু হলো বিভিন্ন ফুলের পরাগ রেনু থেকে সঞ্চিত মূল্যবান নির্যাস। অতি প্রাচীন কাল থেকে মানব জাতি মধুর ব্যবহার করে আসছে , জটিল কঠিন রোগের নিরাময় হিসাবে।  মানব দেহের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় উপাদান মৌচাকের রস।  মধুতে রয়েছে উচ্চমানের পুষ্টিগুণ ৪৫ টির বেশি উপাদান

.গ্লোকোজ, ২৫থেকে ৩৭ শতাংশ

. ফ্রকটোজ, ৩৪থেকে ৪৩ শতাংশ

. মন্টজ , ৫থেকে  ১২ শতাংশ

. সুক্রোজ , .৫থেকে . শতাংশ

. এমাইনো অ্যাসিড , ১২ শতাংশ

. এনকাইন , ১১ শতাংশ

. খনিজ লবন, ২৮ শতাংশ

এছাড়াও মস্কো বিশ্ববিদ্দালয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে ভিটামিন(বি১, বি২, বি৩, বি৫, বি৬), অ্যালুমিনিয়াম , ক্যালোরি, আয়োডিন , জিঙ্ক , কোপার, বোরন , ক্রোমিয়াম, লেড , টিন , বিভিন্ন জৈব অ্যাসিড যেমন : ম্যালিক অ্যাসিড , সাইট্রিক অ্যাসিড, টারটারিক অ্যাসিড , ওস্কালিক ইত্যাদি উপাদান ফফাইটোনসাইড, সাইটোস্ট্যাটিক্স, এন্টি-ব্যাকটেরিয়া, ফাইটোনসাইডস, সাইটোস্ট্যাটিক্স ইত্যাদি মূল্যবান উপাদান গুলি বিদ্যমান, মধু খাওয়ার নিয়ম উপকারিতা জেনে নিন।

মধুর উপকারিতা

.ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে

ক্যান্সার একটি মরণ রোগ।  আপনি যদি নিয়মিত মধু ব্যবহার করেন তাহলে আপনি ক্যান্সারের মতো রোগ থেকে বেঁচে যেতে পারেন কারণ এতে রয়েছে এন্টি-অক্সিডেন্টস, ফ্লাভোনোয়েডস , এন্টি-ব্যাকটেরিয়া, ফাইটোনসাইডস উপাদান

আরো পড়ুন প্রতিদিনের ভালো অভ্যাস

. ত্বকের জন্য মধুর উপকারিতা

গরমে মধুর উপকারিতা মধু খাদ্য পুষ্টিগুণ হিসাবে শক্তিশালী উপাদান। আমরা বেশিরভাগই জানি নিয়মিত মধু ব্যবহার করলে আমাদের তরুন্য ধরে রাখে, ঠিক তেমনি ত্বকের বিভিন্ন রকম ক্রিম ব্যাবহারে থেকে মধুর ব্যবহার করলে উপকারিতা বেশি। 

আরো পড়ুন :ত্বক ফর্সা করার ঘরোয়া উপায়

ত্বকে মধুর উপকারিতা মধুতে রয়েছে প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া , এন্টি- অক্সিডেন্ট ফলে আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে , বয়সের ছাপ পড়ে না , একোন দূর করতে সাহায্য করে ওপেন পোর্সের সমস্যা দূর হয় এছাড়াও কুঁচকানো শুস্ক ত্বককে প্রাকৃতিক উপায়ে রুক্ষতা আনে তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে মধুর উপকারিতা অপরিসীম।

৩. সর্দি কাশি ও জ্বর

শরীরে ঠান্ডা লাগা থেকে শীততাপ নিয়ন্ত্রণ করে মধু, আমাদের শরীরে অনেক সময় তাপমাত্রা কমে যায়, কাঁপুনি দিয়ে জ্বর সহ সর্দি কাশি হতে পারে নিয়মিত মধু খেলে এগুলি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

৪.যৌনতায় মধুর উপকারিতা

পৃথিবীর যতরকম খাদ্য আছে সবার মধ্যে অন্যতম হলো খাঁটি মধু, সেক্সে মধুর উপকারিতা পুরুষ এবং মহিলা সবার  বিভিন্ন রকম জটিল,কঠিন এবং গোপন রোগ থেকে নিরাপত্তা রাখে। পুরুষদের যৌন দুর্বলতা দূর করে, শুক্রাণু বৃদ্ধি , টেস্টরেন ক্যান্সার থেকে রক্ষা রক্ষা করে। আপনি নিয়মিত মধু পান করলে তারুণ্য ধরে রাখতে পারবেন এবং দাম্পত্য জীবনে সুখী হবেন। 

৫. হৃদ রোগে

"আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিয়ালজি"এক গবেষণায় সাম্প্রতিক প্রকাশিত আগামী ১৫ বছরে হৃদ রোগে আক্রান্ত মৃত্যুর আশংকা প্রায় ৩৪ শতাংশ। তাই আপনার হৃদ পেশিকে, সুস্থ, সবল, কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি রাখতে প্রতিনিয়ত মধু সেবন করুন, কারণ এই খাবারে রয়েছে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপাদান।

৬. বাতের ব্যাথায়

এখনকার সময়ে বেশিরভাগ মানুষের শরীরে নানারকম ব্যাথায় আক্রান্ত, হাড়ের জয়েন্টের ব্যাথা, মাথা ব্যাথা, ইত্যাদি  যন্ত্রণাদায়ক ব্যাথার উপসর্গ হিসাবে মধুর উপকারিতা অপরিসীম।

৭. চুলের যত্নে মধুর ব্যবহার

মধুর ব্যবহার কেবলমাত্র ত্বকে সীমাবদ্ধ নয়, চুলের যত্নে ও মধুর ব্যবহার করা হয়। চুল লম্বা,ঘন করার উপায় হিসাবে, চুল পড়া বন্ধ করতে মধুর উপকারিতা অপরিহার্য।

আরো পড়ুন চুল লম্বা না হওয়ার কারণ ,ঘন করার উপায় ও তেলের নাম

৮.  ওজন হ্রাস করতে

খাদ্য তালিকায় মধু একটি বিশেষ উপাদান, মধুতে ফ্যাট থাকে না, তাই শরীরে মেদ ঝরিয়ে সাউথ সবল ঝরঝরে শরীর ওজন কমাতে সহায়তা করে।

9. পাকস্থলী সুস্থ রাখতে

আপনি যদি খাদ্য তালিকায় মধু রাখেন আপনার পাকস্থলী সুস্থ সবল,  হজম প্রক্রিয়া  কাজ সম্পন্ন করে, মধুর উপকারিতায় হাইড্রোক্লোলিক এসিড নৃসরণ কমিয়ে দেয় যার ফলে পাকস্থলীর কাজ ভালো হয়।

১০. স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে

মধু যে কেবলমাত্র  বৃদ্ধি করে তা নয় , মস্তিষ্কের জন্য খুবই ভালো মধুর ব্যাবহার।আপনি ঘুমানোর আগে এক থেকে দুই চামচ মধু খেয়ে নিন, তার ফলে আপনার মস্তিস্কের কাজ ভালোভাবে হয় ফলে আপনার স্মৃতিশক্তি কর্মক্ষমতা বেড়ে যায়।

১১. রক্ত উৎপাদনে মধুর উপকারিতা

নিয়মিত মধু পান করলে আপনার শরীরের গঠনে সহায়তা করবে।রক্ত উৎপাদনকারি বিশেষে উপাদান "আয়রন" যা মধুতে প্রচুর পরিমানে রয়েছে।  যার ফলে শ্বেত রক্তকণিকা, লোহিত রক্তকণিকা সোহো রক্তের বিভিন্ন উপাদান তৈরিতে সহায়তা করে এবং রক্তনালিতে দূষিত পদার্থ জমতে দেয় না সাস্থ ঠিক রাখে, হৃদরোগের সম্ভবনা থাকেই না।

১২. হাঁপানি দূরীকরণে

মধুর অসংখ গুণাবলী থাকলে হাঁপানির বিশেষ ঔষধ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। আপনার যদি হাঁপানি রোগ থাকে নিয়মিত মধুর ব্যাবহারে রোগ দূর হতে পারে। 

১৩. দাঁতের উপকারিতায়

বেশিরভাগ মানুষ দাঁতের সমস্যায় ভুগে থাকে , দাঁতের পোকা, মুখের দুর্গন্ধ, রক্ত জোড়া, মারি ফোলা ইত্যাদি।  আপনি যদি নিয়মিত মধুর ব্যবহার করেন তাহলে মুখ গহ্ববর স্বাভাবিক থাকবে, দাঁতের ক্ষয়রোধ হবে, দাঁতের পাথর জমবে না, ডট্ নোড়া বন্ধ হবে এবং দাঁতের মারি ভালো থাকবে, দীর্ঘদিন পর্যন্ত দাঁতের সমস্যা আসবে না এর জন্য আপনি নিয়মিত মধু ব্যবহার করতে পারেন

১৪. দৃস্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে

 সমাজে প্রচুর মানুষ আছে যারা অল্প বয়সে চোখের সমস্যায় ভুগে থাকে কম দেখা , রাতে কম দেখা, অস্পষ্ট দেখা, চোখের রেটিনা রড কোষের সমস্যা হয়ে থাকে ভিটামিনের অবভাবে। আপনি যদি নিয়মিত মধু ব্যবহার করার অভ্যাস থাকে তাহলে মধুতে সব ধরণের ভিটামিন-  থাকে  আপনার রাতকানা বা দৃষ্টি শক্তি সুদৃঢ় হবে।

১৫. পেশিশক্তি বৃদ্ধি করতে

পেশী শক্তি বৃদ্ধি করতে প্রচুর পরিমানে প্রাকৃতিক চিনির প্রয়োজন এবং বিভিন্ন পুষ্টিগত খাদ্যের প্রয়োজন।  মধু এই সব কিছু উপাদান উপস্থিত যা আপনার পেশিকে শক্তিশালী মজবুত করে তুলতে সাহায্য করবে।

১৬. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে মধুর উপকারিতা

আপনার যদি ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স এর অভাব থেকে থাকে তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগে ভুগতে পারেন এই রোগ দূর করার জন্য মধুর ভূমিকা বিশেষ খাদ্য কারণ এতে আছে ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স।

১৭. অরুচি ও বমি ভাব

অনেকে আছে খাদ্য খাবার খেতে ইচ্ছা করে না মুখের অরুচি বমিভাব,কিন্তু নিয়মিত মধু খেলে এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার সাথে সাথে খাবার খাওয়ার চাহিদা বাড়ায় ইত্যাদি।

১৮. ঘুম বৃদ্ধির জন্য

রাতে ঘুম আসে  না অনিদ্রায় ভুগলে নিয়মিত মধু সেবন করা উচিত কারণ রাতে মধু খাওয়ার উপকারিতা মধুতে সাধারণত যেসব উপাদান থাকে তা অনিদ্রা দূরীকরণে বিশেষ কার্যকরী।

অন্য পোস্ট : ঘুম আসে না কেন।। ঘুম বৃদ্ধির উপায়

১৯. কোলেস্টরেলের জন্য

রক্তে থাকা দূষিত কোলেস্টোরল ১০ শতাংশ কমিয়ে দেয় এই মধু যাদের রক্তে এই সমস্ত কোলেস্টোরল উপস্থিত থাকলে হার্ট এটাক এর আশংকা বেশি থাকে।

২০. রূপচর্চায় মধুর উপকারিতা

আপনার শরীর সুন্দর, সুঠামো, স্বভাবিক রাখার জন্য মধুর ভূমিকা অপরিসীম। চেহারার(ত্বক)রং ফর্সা, চুলের খুশকি, এলাৰ্জি, চুল পড়া, শীতকালে ঠোঁট ফাটা, ত্বক শুস্ক, ত্বকে বয়সের ছাপ,ব্রণ, এক্সিমা,শরীরে কালো দাগ,কুষ্ঠ রোগ,পোকার কামড়,রোদে পড়া দাগ,অল্প বয়সে চামড়া গুড়িয়ে যাওয়াবিভিন্ন চর্ম রোগে এক কথায় রূপ চর্চায় মধুর উপকারিতা অতুলনীয়। 

    মধু খাওয়ার অপকারিতা

মধু খাওয়ার উপকারিতা উপরে  অপকারিতা নিচে আলোচনা করা হলো।  সবকিছুর একটি সীমিত থাকে আপনি তার থেকে বেশি কিছু করলে হিতে বিপরীত হয়ে যায় তেমনি আপনি যদি বেশি মধু খেয়ে নেন আপনার অনেক সমস্যা হতে পারে।

যেমন আপনার যদি ব্লাড সুগার থাকে তাহলে আপনি মধু থেকে দূরে থাকবেন, অতিরিক্ত মধু পান করলে আপনার কোষ্ঠমকাঠিন্য বেড়ে যেতে পারে, এমনকি বেশি মধু খাওয়ার ফলে পেটের ব্যাথা পর্যন্ত হয় , যাদের হাই রক্ত চাপের সমস্যা তারা বেশি মধু খাবেন না। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url

Adsence

Adsence