দিনের ১২ টি ভালো অভ্যাস যা আপনাকে সুস্থ রাখবে এবং মন থাকবে সতেজ
প্রতিদিনের ভালো অভ্যাস
ভালো অভ্যাস কি?
ভালো অভ্যাস গড়ে তোলার উপায়?
সকালের ভালো অভ্যাস, প্রতিদিনের ভালো অভ্যাস,....
দৈনন্দিন জীবন যাপনে পারিবারিক সাংসারিক দায়িত্ব এবং বিভিন্ন কর্মব্যাবস্তার টেনশানে নিজেদের প্রতি যে একটি দায়িত্ব আছে নিজেকে সুস্থ রাখার সেটুকু ভুলে যায়। তাই নিজেকে মানসিক এবং শারীরিক ভাবে সুস্থ রাখতে জানতে হবে। কিছু নিয়ম প্রতিনিয়ত অভ্যাস করলেই শরীর থাকবে সুস্থ এবং মন থাকবে সতেজ। যা দৈনন্দিন কাজে উৎসাহ যোগাবে।
some good habits |
1. ভোরের প্রথমে ঘুম থেকে ওঠা :-
সাধরণত সফল ব্যাক্তিদের জীবনীতে দৈনন্দিন অভ্যাস থেকে রিসার্চ করে পাওয়া গিয়েছে, তারা প্রতিদিন ভোরের প্রথমে ঘুম থেকে ওঠে। এর ফলে তাদের মন থাকে স্বতেজ এবং দেহ থাকে সুস্থ। কাজ করার জন্য মন মানসিকতা ভালো থাকে আর বেশি সময় ও পাওয়া যায়। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যায় এই অভ্যাসের মানুষেরা দীর্ঘায়ু হয় , সবসময় মন থাকে ফুরফুরে , অনেক বেশিদিন যৌন চাহিদার অধিকারী হয়ে থাকে এবং মানসিক চাপ থেকে বাঁচে সর্বস্য খুশি এবং সুখী জীবন যাপন করে।
অন্য পোস্ট : ঘুম আসে না কেন।। ঘুম বৃদ্ধির উপায়
2. ঘুম থেকে উঠেই জল পান করুন :-
"জলের ওপর নাম জীবন " _ আমাদের শরীর প্রাকৃতিক ভাবে সুস্থ সবল রাখার জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করে জল। আমাদের শরীরের প্রায় ৬৫ শতাংশ জলের ভাগ দিয়ে গঠিত। শরীরের বিভিন্ন অংশ যন্ত্র সচল রাখতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে , বিপাকীয় অন্ত্র পরিষ্কার রাখতে জল এর ভূমিকা বিশেষ।
ঘুমের পর সকালে কিছু জীবাণু মুখে থাকে তাই ভোরের প্রথমে জল পান করার মাধ্যমে দিন শুরু করা ভালো অভ্যাস।
3. শরীর সচল রাখার জন্য পরিশ্রম কাজ অথবা ব্যায়াম করা :-
ব্যবহার অনুপযোগী যে কোনো বস্তু বা প্রাণীর ক্ষয় হয়। তাই আমাদের শরীর স্বাভাবিক সতেজ স্ফুর্ত রাখার জন্য ব্যায়াম বা পারিশ্রমিক কাজের প্রয়োজন। সেটা হোক ফুটবল খেলা বা কোদাল কোপানো , যোগাসন, হাটা হাঁটি , করা। এর ফলে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃধ্যি পায়। মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে। দেহের ওজন ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে যৌন জীবনে স্থায়িত্ব ধরে রাখে কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে প্রতিদিন এই ভালো অভ্যাসের মাধ্যমে।
4. স্বাস্থ্য সমত পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়া :-
"স্বাস্থ্যই
সম্পদ" -আমাদের প্রত্যেকের জীবনকে সুন্দর সুখময় পরিপূর্ণ করার জন্য একটি স্বাস্থবান , সুস্থ সবল নীরোগ দেহের প্রয়োজন।
এর জন্য প্রতিদিনের ভালো অভ্যাসে পুষ্টিকর খাদ্যের প্রয়োজন।
যে সমস্ত খাদ্য আহার করলে দেহ বৃধ্যি , ক্ষয়পূরণ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। সেই সমস্ত খাদ্য প্রতিদিনের রুটিনে রাখা প্রয়োজন
5. ধূমপান থেকে বিরত থাকা :-
আমরা সকলেই জানি বা নিজে চোখে বিভিন্ন খবর পত্রিকায় টিভি এর চ্যানেল গুলিতে লক্ষ করে থাকি একটি সচেতন মূলক বিজ্ঞাপন - "ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর" । আমার মনে হয় এই ধরণের বিজ্ঞাপন কারোর অজানা নেই।
কোনো কোম্পানি তাদের প্রোডাক্ট সেল করার জন্য ভালো গুণাবলী গুলি তুলে ধরে। আর ধূমপান তামাক জাতীয় কোম্পানি গুলো তাদের প্রোডাক্ট এর খারাপ দিক গুলি তুলে ধরে কারণ সরকারি ভাবে তাদের কম্পানি গুলো এই এড না দিলে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাহলে আপনারাই ভাবুন যে নিজের সম্বন্ধে খারাপ কিছু বলতে পারে তাহলে তার মাঝে কতটা ক্ষতি হতে পারে।
তাই আমাদের প্রতিদিনের ভালো অভ্যাসে ধূমপা বর্জন
করা উচিত।
6. খাদ্য তালিকায় ফল ও শাক সবজি রাখুন : -
প্রতিদিন আমরা অনেক ধরণের খাদ্য খাবার খেয়ে থাকি।
তবে সুস্থ থাকতে বিশেষ কিছু খাবার খাওয়া প্রয়োজন। খাদ্য তালিকায় অন্যতম খাবার হলো সকল জাতীয় ফল ও সবুজ শাক সবজি। এই ধরণের খাদ্য গুলিতে প্রচুর পরিমানে খাদ্য উপাদান থাকে।
যে গুলি আমাদের শরীর কে সুস্থ সবল ও স্বতেজ রাখে। চেহারা সুন্দর করে এবং জীবন কে দীর্ঘায়ু করে। তাই আমাদের প্রতিদিনের ভালো অভ্যাসে শাক সবজি ও ফল রাখা জরুরি।
7. অল্প হলেও প্রতিদিন বই পড়ুন :-প্রতিদিনের ভালো অভ্যাস
daily good habits |
আমরা বই কেন পড়বো ?
অন্য পোস্ট : প্রতিদিন বই পড়ার গুরুত্ব, উপকারিতা
গল্পের বই পড়ার উপকারিতা , বই পড়ার ইতিহাস , সকল সফল ব্যাক্তিদের জীবনী ঘাটলে বই পড়ার অভ্যাস খুঁজে পাবেন।
বই পড়ার অনুভূতি সুমধুর। অবসর সময়ে উপন্যাস পড়ার উপকারিতা আমাদের শব্দ ভান্ডার বৃদ্ধি করে, মস্তিস্ক কে স্বতেজ এবং স্মৃতি শক্তি উন্নত করে। প্রতিদিনের অভ্যাসে নিজেকে মানসিক ভাবে সুস্থ রাখার জন্য , চিন্তা শক্তি উন্নতি করতে, নতুনত্বের খোঁজে জ্ঞানবৃদ্ধি , সহানুভূতিবোধ ,আত্মসম্মান বৃদ্ধিতে নিয়মিত বই পড়া ভালো। Best books to read to change your life for mindset.
8. আত্মীয়দের সঙ্গে সু সম্পর্ক বজায় রাখুন :-
আত্মীয় স্বজন হলো সামাজিক ভারসাম্যের অন্যতম। আমরা কেউ সমাজের বাহিরে নোই।
তাই ভালো সমাজ গড়তে আত্মীয়দের ভীষণ প্রয়োজন। আত্মীয়তার পরিচয় আমাদের ঐক্য , সম্প্রীতি ও সহযোগিতা সামঞ্জস্য থাকে। আমাদের জন্ম থেকে আমৃত্যু কাল পর্যন্ত আত্মীয়দের মাঝে ভালোবাসা , সহানুভূতি , পেয়ে থাকি।
বিভিন্ন রীতি নীতি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আত্মীয়বর্গদের মাঝে একে ওপরে একাকিত্ব দূর করা যায়।
তাই মানবজীবন মানসিক সুস্থ সবল স্বতেজ থাকার জন্য আত্মীয়তার সম্পর্কের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রতিনিয়ত তাদের সাথে যোগাযোগ করা একে ওপরের খোঁজ খবর নেয়া ইত্যাদি হলো ভালো অভ্যাস ।
9. পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুমানো :-
প্রতিদিনের ভালো অভ্যাসে পর্যাপ্ত পরিমান ঘুমানো একটি ভালো অভ্যাস।
শারীরিক সুস্তথা বজায় রাখে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে , যৌনতায় উদ্দীপনা আসে। তাছাড়াও মানসিক দিয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী করে তোলে। সু অনুভতি সোহো মানসিক চাপ কমায় উন্নত স্মৃতি শক্তি ও আয়ু বাড়ায়। তাই আমাদের জীবনে প্রতিদিন যথেষ্ট ঘুমের প্রয়োজন।
10. নিজেকে সময় দিন :-
মানসিক ভাবে সুস্থ থাকার উপায়, নিজের জন্য সময় বার করা, নিজেকে নিয়ে ভাবা, নিজেকে ব্যাস্ততা রাখা অর্থাৎ নিজেকে সময় দেয়া।
আপনার ভালো থাকার দায়িত্ব আপনি নিবেন তাহলে অনেক সুখী হবেন। নিজের সম্বন্ধে জান, নিজেকে চেনা, নিজের মতো করে বাঁচা। জীবনে বড়ো হতে হলে কি করতে হবে, কোন পথে চলতে হবে, নিজেকে পরিবর্তন করার উপায়, কিভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা যায়, এগুলি নিয়ে ভাবা, নিজের প্রতি যত্নশীল হওয়া।
এই কর্মব্যাবস্তার যুগে নিজেকে সুখী করার জন্য নিজের ইচ্ছা অনুভূতি গুলি প্রাধান্য দিতে হবে। কোনগুলি ভালো লাগা সেগুলির প্রতি খেয়াল করা, প্রকৃতির প্রতি আকর্ষণ বাড়ানো , ইচ্ছা স্বাধীন লেখালেখি , গল্প , কবিতা আপনার যা ভালো লাগে।
এবং নিয়মিত যোগাসন, মেডিটেশন করা এই গুলি ফলো করলে প্রতিদিনের অভ্যাসে আপনার জীবন পরিবর্তন আসবেই শরীর ও মন সুস্থ থাকবে।
11. ওপরকে সাহায্য করার মনোভাব গড়ে তোলা :-
আমরা কিভাবে মানুষের সেবা করতে পারি, মানুষের পশে দাঁড়ানো, মানুষকে সাহায্য করা, গরিবের প্রতি দোয়া কর, এই চিন্তাভাবনার মানুষেরা বাস্তবে সফল কামি এবং সুখী ব্যাক্তি।
প্রতিটি ধর্মের সারাংশ এমনটাই মানূষ মানুষকে ভালোবাসো। , সহযোগিতা করে একে ওপরের দুঃখ ভাগ ভাগই করো ইত্যাদি।
আপনারা কি কখনো কারোর বিনা স্বার্থে উপকার করেছেন ? বিনা স্বার্থে একদিন দেন করে দেখো আপনার মনে কতটা খুশি আসে। হ্যাঁ এটাই বাস্তব প্রমাণিত আমার হয়। ইসলাম ধর্ম মতানুসারে যে মানুষকে সাহায্য করবে স্বয়ং আল্লাহ তাকে সাহায্য করবে। অতএব সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষ , অভাব অনটন বিপদ গ্রস্ত মানুষদের উপকারে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আস্তে হবে, এতে আপনি ব্যাক্তিগত ভাবে মানসিক , সামাজিক ,মানব ভাবাবেগ সুচিন্তার জাগরণ ঘটিয়ে লাভবান হবেন।
তাই প্রতিদিনের অভ্যাসে নিজেকে সুখী রাখতে
দরিদ্র মানুষ অন্তত একজন কে সাহায্য করুন।
12. সময়ের কাজ সময়ে করা উচিত :-
জীবনে সফল হওয়ার মূলমন্ত্র কি ? প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিন শেষ করা।
আমরা একটি কাজ করতে গিয়ে একটু করার পর বা তার আগেই ভেবে ফেলি। কিন্তু ঘটনা হলো পরদিন তো অন্য কাজ এসে আবার হাজির হয় তার ফলে আমাদের আরো বেশি চাপ সৃষ্টি হয় , সে কাজ টা ও করা হয় না। এই ভাবে আমাদের অলসতা লোভ পায়।
আর আমরা দিন দিন আমাদের লক্ষ থেকে একটু একটু করে পিছিয়ে পড়ি। একটা সময় গিয়ে দেখা যায় আমাদের লক্ষ বা স্বপ্ন অনেক দূর পৌঁছে যায়। এই সব হলো আমাদের অলসতা প্রতি দিনের কাজ প্রতিদিন না করা।
জীবনে সফল হয়েছে তারই যারা কাজের প্রতি মনযোগ দিয়েছে , কাজ কে ভালোবেসে গ্রহণ করেছে , যে সময়ের কাজ সেই সময়েই করেছে।
সময়ের কাজ সময়ে শেষ করার অনেক উপকারিতা আছে। মানসিক ভাবে চাপ থেকে বাঁচা যায় অজ্ঞাত কাজের চাপ ঠেলে মুক্তি , মনের দিক দিয়ে সুখানুভুতি অনুভব করা যায়।
তাই মদের প্রতিদিন উপরিউক্ত সকল অভ্যাস গুলি মেনে চললে , আমরা জীবনে সফলতা পাবো , জীবন দীর্ঘায়ু হবে , যৌনতা জীবনে উদ্দীপনা আসবে, সামাজিক পারিবারিক সকল ব্যাক্তিত্বের মাঝে জায়গা করে নিতে পারবো
আমার দেয়া মতামতগুলো অনেক বই পড়ে ইন্টারনেট জগতে রিসার্চ করার পর আপনাদের
কে উপহার দেয়ার চেষ্টা করলাম। আপনার কতটা ভালো লাগলো নিচের কমেন্ট বাক্স এ জানাবেন , আর আপনি যাদের ভালোবাসেন এই পোস্ট টি তাদের কাছে শেয়ার করতে পারেন।